ফাইল ছবি
চলতি বছরের এপ্রিলে ১১৩ জন কন্যা এবং ১২০ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। নারীবাদি সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৩টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মোট ২৩৩ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪২ জন কন্যাসহ ৬০ জন। তার মধ্যে ৩ জন কন্যাসহ ৯ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ৩ জন কন্যাসহ ৪ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১ জন। এছাড়াও ৯ জন কন্যাসহ ১২ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ৪ জন কন্যাসহ ৮ জন। উত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে ৯ জন কন্যাসহ ১০ জন, এর মধ্যে উত্যক্তকরণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১ জন। এসিডদগ্ধের শিকার হয়েছে ১ জন। ২ জনের অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যুর হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ জন কন্যাসহ ৯ জন এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যার শিকার হয়েছে ১ জন কন্যাসহ ৫ জন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ জন কন্যাসহ ১৭ জন। পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩ জন। ৩ জন গৃহকর্মীর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে ২ জন গৃহকর্মীর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন কারণে ৩ জন কন্যাসহ ৩৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ৮ জন কন্যাসহ ২১ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ৫ জন কন্যাসহ ১৯ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, এরমধ্যে ১ জন আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছে। ১৪ জন কন্যাসহ ১৬ জন অপহরণের ঘটনার শিকার হয়েছে। ফতোয়ার শিকার হয়েছে ১ জন। ১ জন কন্যা সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছে। বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে ৪ টি, এরমধ্যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে ১টি। এছাড়া ৩ জন কন্যাসহ ১১ জন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
সদর উপজেলার রুহিয়া থানার চতুরাখোর (পাঠানপাড়া) গ্রামে এক গৃহবধু (৩২) গণধর্ষন ও মারপিটের অভিযোগে মামলা দয়ের করেন। এ ঘটনায় গত বুধবার স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে রুহিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহবধু। ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল ওই গৃহবধু তার শ্বশুড়ের ভুট্টা ক্ষেতে পাতা তুলছিলেন। এমন সময় সদর উপজেলার রুহিয়া থানার চতুরাখোর (পাঠানপাড়া গ্রামের মো: আকবর আলীর ছেলে মো: মোস্তাফিজুর রহমান (গাজী)’র নেতৃত্বে ৩ জন লোক পেছন থেকে ওই গৃহবধুর মুখ চেপে ধরে ধর্ষনের উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ সময় গৃহবধু চিৎকার করার চেষ্টা করলে মোস্তাফিজুর রহমান ও অন্যান্য আসামীরা ধারালো অস্ত্র বের করে গলায় লাগিয়ে চিৎকার করতে মানা করেন। পরক্ষনেই আসামীরা ওই গৃহবধুর মুখে উড়না পেঁচিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এ সময় ওই গ্রামের এক নারী চিৎকার শুরু করলে আশপাশের মানুষজন ঘটনাস্থলে এসে উল্লেখিত ৩ জনকে আটক করে। এ সংবাদ আটককৃতদের বাড়িতে পৌছালে তারাও দলবল নিয়ে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে মারপিট করে ওই গৃহবধু ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মারপিট করে গুরুতর জখম করে। পরে ওই গৃহবধুসহ আহতদের ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওই গৃহবধুর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
মামলায় আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার রুহিয়া থানার চতুরাখোর (পাঠানপাড়া) গ্রামের মো: আকবর আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (গাজী) ৩৫), মৃত এশরারুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান (৩৩), জয়নাল আবেদিনের ছেলে ও আখানগর ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো: জনি পারভেজ (৩১), মৃত ইশারত খাঁয়ের ছেলে মো: মোকাব্বের আলী, মৃত আজির উদ্দীনের ছেলে মো: হোসেন আলী (৩৮), মো; আকবর আলীর ছেলে মো: মশিউর রহমান (৩৪), মৃত জমি উদ্দীনের ছেলে মো: আব্দুস সাত্তার (ছত্তর), মো: আকবর আলীর ছেলে মো: মনছুর আলী (৩০), মৃত আজির উদ্দীনের ছেলে মো: আকবর আলী (৫৮)।
এ ব্যাপারে রুহিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইউ