সংগৃহীত ছবি
দীর্ঘ অপেক্ষার পর যাত্রা শুরু করল বিশ্বের বৃহত্তম প্রমোদতরী আইকন অফ দ্য সিস। স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে জাহাজটি। গন্তব্য পূর্ব ও পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। প্রমোদতরীটি সাত দিনের সমুদ্রযাত্রার পর গন্তব্যে পৌঁছবে।
প্রমোদতরীটি টাইটানিকের চেয়েও পাঁচ গুন বড়। সাগরের অন্তহীন নীলের মাঝে যেন আস্ত এক মায়ানগরী। বিনোদনের অন্য এক দুনিয়ায় মোড়া এটি। বিলাসিতার চোখ ধাঁধানো ঝলক রয়েছে প্রমোদতরীতে।
এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী ছিল রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের ওয়ান্ডার অফ দ্য় সিজ। সেটিকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী হলো আইকন অব দ্য সিজ।
আইকন অফ দ্য সিজ-এর দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার (১,১৯৭ ফুট)। মোট ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। এই ক্রুজ জাহাজে রয়েছে ২০টি ডেক, ৭টি সুইমিং পুল, ৬টি ওয়াটার স্লাইড। এছাড়াও জাহাজটির সবচেয়ে উপরের ডেকে আছে ৪০ টির বেশি বার, রেস্তোরা, লাউঞ্জ এবং বিনোদোনস্থল। বিশাল এই তরীতে থাকতে পারবেন অন্তত ৭ হাজার ৬০০ জন যাত্রী। যেখানে ২ হাজার ৩৫০ জন ক্রুর আলাদাভাবে থাকার বন্দোবস্তও রয়েছে।
২০ তলা বিশিষ্ট জাহাজটিতে যাত্রীরা চাইলেই ৭টি পুলে সাতার কাটতে পারবেন। আবার যদি কারো মনে হয়ে যে, একটু উষ্ণ পানির প্রসবনে গা ভিজিয়ে নেয়া দরকার তবে তার জন্য থাকবে ৯টি ওয়ার্লপুল, যেখানে সাধারণত তীব্র বেগে উষ্ণ পানির ধারা প্রবাহিত হয়। কেবল পুলই নয় জাহাজটিতে ভোজন রসিকদের জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা ৪০ ধরনের ডাইনিং মেন্যু পাওয়া যাবে জাহাজটিতে। এছাড়া অন্যান্য খাবারের সুবিধা তো থাকবেই। আবারও কেবল আহার নয়, জাহাজটিতে থাকছে একাধিক পানশালাও। যেখানে চাইলে যাত্রীরা যেকোনো সময় নিজেদের গলা ভিজিয়ে নিতে পারবেন।
সপ্তাহের ভাড়া কত?
জাহাজটি মোট আটটি আলাদা অংশে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ভাগের বৈশিষ্ট্য আলাদা। কোনোটি তরুণ যুগলদের জন্য, আবার কোনোটি বৃদ্ধদের মনোরঞ্জনের জন্য। আছে শিশুদের জন্য আলাদা এলাকাও। যেখানে কেবল শিশুদের জন্য নির্ধারিত সেবাই মিলবে। বিশালাকৃতির এই জাহাজটি চলাতে আশ্রয় নেয়া হয়েছে তুলনামূলক আধুনিক পদ্ধতির। জাহাজটির মূল জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হলেও এতে ফুয়েল সেল প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে ফিনল্যান্ডের মেয়ার তুর্কু শিপইয়ার্ডে এই প্রমোদতরী তৈরির কাজ শুরু হয়। সেখান থেকেই এর ট্রায়াল রান হয়েছে। সেই পরীক্ষায় কয়েকশ’ মাইল পথ ভ্রমণ করেছে আইকন অব দ্য সিজ। গত বছরের শেষ দিকে আরেকটি ট্রায়াল রান হয়। জাহাজটি বানাতে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি ডলার।
মায়ামি থেকে পশ্চিম ক্যারিবিয়ান পর্যন্ত চলবে এই প্রমোদতরী। ক্যারিবিয়ান সাগরের পূর্ব ও পশ্চিম পথ ধরে এক সপ্তাহের সফরে থাকবে এটি। এই সাত রাতের মধ্যে এক রাতে বাহামায় রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার একটি দ্বীপে অতিথিদের নিয়ে যাওয়া হবে। সাত রাতে ইস্টার্ন ক্য়ারিবিয়ানের এই সফরে বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রমণ করা যাবে।
রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, এ বছরের শুরুতে প্রমোদতরীটির প্রথম যাত্রায় জনপ্রতি খরচের রেঞ্জ হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ডলার থেকে ২ হাজার ২০০ ডলারের কাছাকাছি। বিলাসবহুল এই জাহাজে সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দামই ১ হাজার ৭৫৬ ডলার।
//এল//