সংগৃহীত ছবি
ঈদের ছুটিতে ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে এই শহরে ও এর আশেপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়াতে সুবিধা হয়। এই ছুটিতে ঢাকার অদূরে দর্শনীয় স্থান বা বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বেড়িয়ে আসতে পারেন। এসব দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে পদ্মা রিসোর্ট, মৈনট ঘাট, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডম, পানাম সিটি, ড্রিম হলিডে পার্ক ইত্যাদি।
পদ্মা রিসোর্ট
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা সংলগ্ন পদ্মার বিস্তৃত চরজুড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ নিদর্শন পদ্মা রিসোর্ট।এ রিসোর্টে দিনদিন পর্যটন বাড়ছে। পদ্মা রিসোর্ট দেখলে মনে হবে চরে যেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ জেগে আছে। সাড়ে তিন শ শতাংশ জমির বিশাল বিস্তৃত চরে প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য নিয়ে পদ্মা রিসোর্টের কটেজগুলো (কুড়েঘর) নির্মাণ করা হয়েছে। নদীরপাড় সংলগ্ন পদ্মা নদীঘেরা চরের মধ্যে কুড়েঘর ও প্রাকৃতিক পরিবেশ পদ্মা রিসোর্টকে মনোমুগ্ধকর করে রেখেছে। লৌহজং থানা সংলগ্ন স্থান থেকে ট্রলারে বা স্পিডবোটে পদ্মার ছোট একটি নদী পাড়ি দিয়েই পদ্মা রিসোর্ট। রাতের বেলায় যারা চাঁদ দেখতে এবং ভোরের গ্রামীণ পরিবেশ দেখতে ভালোবাসেন তারা একবার ঢু মেরে আসতে পারেন ঢাকার কাছের এই রিসোর্ট থেকে।
মৈনট ঘাট
কনক্রিট শহরের বাইরে এক মনোরম সবুজ স্বর্গভূমি মৈনট ঘাট। ঢাকার দোহারে পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত এই পর্যটন আকর্ষণ মিনি কক্সবাজার নামেও পরিচিত। মৈনট ঘাটে পাওয়া যাবে সাগর দেখার স্বাদ। কম সময়ে সহজেই ঘুরে আসা যাবে। বিপুল জলরাশির পর ঢেউ দোলানো নৌকা চোখ জুড়িয়ে দেবে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
শিশু কিংবা বড় সব বয়সীদের জন্য রোমাঞ্চকর জায়গাটি হলো গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সাফারি পার্কটির অবস্থান।
চিড়িয়াখানায় প্রাণীরা খাঁচায় থাকে। কিন্তু এখানে নিজেরা খাঁচায় বন্দি থেকে খুব কাছ থেকে দেখা যাবে কাঙ্ক্ষিত বৈচিত্র্যময় প্রাণীদের।
পার্কের ভিতরের অংশকে ৫টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। কোর সাফারি, সাফারি কিংডম, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান ডাইভার্সিটি পার্ক ও বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। হরেকরকম প্রাণী দেখাসহ আনন্দময় নানা অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এই ঈদে ঘুরে আসতে পারেন। বয়সভেদে ভিন্ন মূল্যে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে এখানে। আর বেরিয়ে আসা যাবে ভিন্নরকম স্মৃতি নিয়ে।
ড্রিম হলিডে পার্ক
ঢাকার অদূরে নরসিংদীতে রয়েছে এক স্বাপ্নিক জায়গা ‘ড্রিম হলিডে পার্ক’। এটি একটি থিম পার্ক। অল্প সময় আর অল্প খরচে দিনভর পরিবার নিয়ে কিংবা একাকি আনন্দ উপভোগের সুযোগ রয়েছে এ পার্কে। ছোট বড় সবার জন্য আলাদা রাইড রয়েছে। একাকি থাকলেও এখানকার কৃত্রিম অভয়ারণ্যে আর সুবিশাল লেকের পাড়ে হেঁটে মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা যাবে। খাবার-দাবারের ভালো মানের সুযোগ রয়েছে এখানে।
ফ্যান্টাসি_কিংডম
ফ্যান্টাসি কিংডম মূলত একটি থিম পার্ক। ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানার জামগড়া এলাকায় অবস্থিত একটি বিনোদন পার্ক। থিম পার্কটি প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত, যার মধ্যে একটি থিম পার্ক, একটি ওয়াটার পার্ক, শুষ্ক পার্ক এবং হেরিটেজ কর্নার রয়েছে। বর্তমান সময়ে, ফ্যান্টাসি কিংডম বাংলাদেশে সর্বাধিক পরিদর্শিত থিম পার্ক, যার গড় বার্ষিক উপস্থিতি ৬ কোটি। ঈদের ছুটিতে বেড়িয়ে আসতে পারেন ফ্যান্টাসি কিংডম থেকেও।
পানাম সিটি
সোনারগাঁ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হলেও উনিশ শতকের প্রথম দিকে পানাম নগর বিখ্যাত হয়ে উঠে। ইংরেজরা এটিকে ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে মূলত ঢাকাই মসলিন কাপড়ের কেনাবেচার জন্য। এছাড়াও মুঘল আমলে এই এলাকায় বেশ কিছু ব্রিজ নির্মাণ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ এখনো আপয়ান্র জন্য অপেখহা করে আছে পানাম নগরে। ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণে বাংলাদেশ কখনোই উদাহরণ নয়। তবুও, বেশ কিছু লাল ইটের দালান এখনো টিকে আছে পানাম নগরে যা হতে পারে আপনার ঘুরতে যাওয়ার ঠিকানা।
//এল//