ফাইল ছবি
শীতকালে শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন অনেক সময় ইন্টারনেট সংযোগ ধীরগতির হতে দেখা যায়। এর পেছনে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত এবং প্রাকৃতিক কারণ রয়েছে। যদিও ইন্টারনেট সেবার গতি সরাসরি তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে না, তবে শৈত্যপ্রবাহের সাথে যুক্ত কিছু পরিস্থিতি ইন্টারনেট পরিষেবাকে প্রভাবিত করতে পারে। এর সম্ভাব্য কিছু কারণ বিশ্লেষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা, এগুলো হলো...
* শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমে যায়, যা টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার, ফাইবার অপটিক ক্যাবল, এবং রাউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে।
* ফাইবার ক্যাবল তীব্র ঠান্ডায় সংকুচিত হতে পারে, যা ডেটা ট্রান্সমিশনে বিলম্ব ঘটায়।
* রাউটার বা নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের অপারেটিং তাপমাত্রা কমে গেলে তা কার্যক্ষমতা হারাতে পারে।
* শীতের সময় তীব্র ঠান্ডায় অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মোবাইল টাওয়ার বা ইন্টারনেট সার্ভারগুলোর কার্যক্রমও প্রভাবিত হতে পারে।
* শীতকালে মানুষ বেশি সময় ঘরে থাকে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং এবং রিমোট কাজের জন্য ইন্টারনেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা ব্যান্ডউইথ সংকট তৈরি করতে পারে।
* তুষারপাত বা ঘন কুয়াশা ফাইবার ক্যাবল, স্যাটেলাইট ডিশ বা ওয়্যারলেস ডিভাইসের সংযোগে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তুষার বা বরফ সরঞ্জামের ওপর জমে গেলে ডেটা ট্রান্সমিশন বাধাগ্রস্ত হয়।
* শীতকালে ঘন কুয়াশা বা আর্দ্র আবহাওয়া রেডিও তরঙ্গের গতি কমিয়ে দিতে পারে, যা ওয়্যারলেস এবং স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
শৈত্যপ্রবাহে ইন্টারনেট ধীরগতির প্রতিকারমূলক যেসব ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে...
* ইন্টারনেট সরবরাহকারী সংস্থাগুলোকে শীতকালে সরঞ্জামগুলোর সুরক্ষা বাড়াতে হবে।
* ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের সময় আরো উন্নতমানের উপকরণ ব্যবহার করা প্রয়োজন।
* ব্যাকআপ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে মোবাইল টাওয়ারগুলোতে শক্তিশালী জেনারেটর স্থাপন করা উচিত।
শৈত্যপ্রবাহের সময় ইন্টারনেট ধীরগতির পেছনে প্রকৃতি এবং প্রযুক্তির পারস্পরিক প্রভাব দায়ী। তাই এই সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের উন্নয়ন এবং ব্যবহারকারীদের সচেতনতা জরুরি। শীতকালীন সময়ে ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রাখতে এই বিষয়গুলো নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।