
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
দলটির নেতারা মনে করেন, ইসলামী ছাত্রশিবির নানাভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় ষড়যন্ত্র বলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং বীর শহিদদেরকে অবমাননা করছে। মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করবে।
এছাড়া ক্যান্টিনটির প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে’র (মধুদা) হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় ছাত্রশিবিরের নিতে হবে বলে এক বিবৃতিতে বলেছে ছাত্রদল।
রোববার সন্ধ্যায় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিবৃতিতে ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে (মধুদা) ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অপারেশন সার্চলাইট এর হানাদার বাহিনীর হাতে শহিদ হন। জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামি ছাত্রসংঘ পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকা পালন করে। শহিদ মধুদার হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় জামায়াতে ইসলামী, তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ এবং পরবর্তীতে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন শহিদ মধুদার প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি অসম্মানজনক। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবির এর সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, শহিদের নিজের আঙিনায় খুনির সহযোগীদের বিচরণ খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। অনুতাপ এবং বিবেকবোধ থেকেই ছাত্রশিবির এর মধুর ক্যান্টিনে আসা উচিত নয়। তারা আরও উল্লেখ করেন, ‘অপারেশন সার্চলাইট এ শহিদ মধুদার মতো অসংখ্য মানুষ শহিদ হওয়ার প্রেক্ষিতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন।
এর আগে রোববার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এসময় লিখিত বক্তব্যে শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলকে তাদের পথ অনুসরণ করতে দেখা যাচ্ছে।
শিবির সভাপতি আরও বলেন, ছাত্ররাজনীতি নিয়ে যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল তা কিছু ছাত্রসংগঠনের আধিপত্যনীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, দখলদারি, ট্যাগিং ও দোষ চাপিয়ে দেওয়ার হীন সংস্কৃতি চালু রাখার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনীতি বিমুখতা তৈরি এবং শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলকে তাদের পথ অনুসরণ করতে দেখা যাচ্ছে।
ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহযোগিতা ও সহাবস্থান নিশ্চিত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সবার দায়িত্ব উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে অন্যায়ভাবে দমনের চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, নিজেরা সন্ত্রাসী কায়দায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তার দায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, যার প্রবক্তা ছিল নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ।
//এল//