সংগৃহীত ছবি
সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে, দেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষাসহ বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় দেওয়া। দেশের নিরাপত্তা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর কোনো দেশের নিরাপত্তার কথা উঠলেই সাধারণত দুটি চিত্র আমাদের সামনে আসে; প্রথম সেনাবাহিনী এবং দ্বিতীয় পুলিশ।
একটি দেশ তথা দেশবাসীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী। পুলিশের দায়িত্ব দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার রক্ষা করা এবং সেনাবাহিনীর দায়িত্ব বাইরের শত্রুর হাত থেকে দেশ, দেশবাসীতে নিরাপদ রাখা।
সেনাবাহিনীর একটা বড় অংশে দেশের সীমানায় পাহারা দেয়। তাই প্রতিটি দেশে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী থাকা খুবই জরুরি। কিন্তু যদি বলি যে পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে যাদের সীমান্তে কোনো সেনাবাহিনী নেই। কী শুনতে অবাক লাগছে কি? ভাবছেন তো তাহলে এই সব দেশের নিরাপত্তা কীভাবে রক্ষিত হয়? তাহলে চলুন সীমান্তে সেনা বিহীন দেশগুলো সম্পর্কে একটু নেয়া যাক।
মরিশাস
মরিশাস হলো ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এখানকার লোকসংখ্যা সাড়ে দশ লক্ষেরও কম। ১৯৮৮ সালে এই দেশ যুক্তরাজ্য বা ইউনাইটেড কিংডম থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। মরিশাসের নিজস্ব এবং নিয়মিত সশস্ত্র কোনো সেনাবাহিনী নেই। তবে দেশের পুলিশ বাহিনী আছে। আর রয়েছে একটি আধাসামরিক ইউনিট। এর পোশাকি নাম স্পেশাল মোবাইল ফোর্স। যাইহোক, মরিশাসের প্রায় ১০,০০০ জন পুলিশকর্মী দেশের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় ধরনের নিরাপত্তা পরিচালনা করে থাকেন।
মোনাকো
বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র হল মোনাকো। ফরাসি ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত এই ছোট্টো দেশটি ট্যাক্স হেভেন হিসেবে পরিচিত। মাত্র ০.৭৮ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই ছোট্টো দেশের লোকসংখ্যা মাত্র ৩১,০০০। ১৭ শতকের পর থেকে এ দেশে আর কোনো রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী নেই। তবে, এখানে দুটি ছোট সৈন্য রয়েছে, একজন রাজপুত্রকে পাহারা দিচ্ছেন এবং একজন অসামরিক লোক। এই দেশকে রক্ষা করেন ফরাসি সেনারা।
কোস্টারিকা
সেই ১৯৪৯ সাল থেকে কোস্টারিকার কোনো সশস্ত্র বাহিনী নেই। তবে এ দেশের পুলিশ বাহিনী সাধারণত প্রতিরক্ষার কাজ করে থাকেন। দেশটিকে অনেকেই "মধ্য আমেরিকার সুইজারল্যান্ড" বলে ডাকেন। ১৯৪৮ সালে এখানে একটি ভয়ংকর গৃহযুদ্ধ হয়েছিল। এরপর থেকেই এই দেশ তার সামরিক বাহিনী শেষ করে দেয়। সামরিক অভিযান ছাড়া বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে একটি এই কোস্টারিকা। তবে অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো সমাধানে দেশে রয়েছে পুলিশবাহিনী।
আইসল্যান্ড
ন্যাটোর সদস্য হলেও আইসল্যান্ডের কোনো স্থায়ী সামরিকবাহিনী নেই। আইসল্যান্ড ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। সৌন্দর্যের দিক থেকেও আইসল্যান্ডের কোনো তুলনা হয় না। এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে স্বয়ং ন্যাটো। ১৮৬৯ সাল থেকে এই দেশের সীমান্তে কোনো সেনাবাহিনী নেই। ন্যাটোর সদস্য হওয়ায় দেশের যাবতীয় সুরক্ষার দায়িত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
গ্রেনাডা
গ্রেনাডা হল ক্যারিবিয়ান সাগরের লেজার অ্যান্টিলেসের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। ১৯৩৩ সালে গ্রেনাডায় মার্কিন আক্রমণের পর থেকে দেশটির আর কোনো নিজস্ব সামরিকবাহিনী নেই। যাইহোক, এই দেশে রয়্যাল গ্রানাডা পুলিশ ফোর্স নামে একটি পুলিশবাহিনী রয়েছে। এটি উপকূলীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী হিসেবেও কাজ করে।
সেন্ট লুসিয়া
সেন্ট লুসিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্তর্গত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই দেশটি কমনওয়েলথের সদস্য। এই রাষ্ট্রেরও নিজস্ব কোনো সেনাবাহিনী নেই। তবে দেশের নিরাপত্তার জন্য একটি বিশেষ ইউনিট এবং একটি নৌবাহিনী সহ নিজস্ব পুলিশবাহিনী রয়েছে।
//এল//