
সংগৃহীত ছবি
‘ঘোস্ট ম্যারেজ’ বা ‘ভূতের বিয়ে’ শুনতে কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও চীনে এমনই এক প্রথা ৩ হাজার বছরেরও বেশি বছর ধরে প্রচলিত আছে। চীনাদের বিশ্বাস কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার সত্তা বা আত্মা পরবর্তী জীবনেও জীবনযাপন করতে থাকে। এই সময়কে তারা বর্তমান জগতের প্রতিফলন বলে মনে করেন। যেখানে অর্থ, বাসস্থান এবং এমনকি বিবাহও বিদ্যমান। আর এই প্রথাটিই ‘ভূতের বিয়ে’ হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি চীনা গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে চীনা লোককাহিনী বিশেষজ্ঞ হুয়াং জিংচুন জানান, উত্তর চীন, শানসি, শানডং ও হেবেই প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘ভূতের বিয়ে’ পালিত হয়ে আসছে প্রায় ৩ হাজার বছর ধরে। এই রীতিতে মৃতকে বিয়ে দেওয়া হয় জীবিত একজনের সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, দু’জন মৃত ব্যক্তির মধ্যেও বিয়ের রীতি রয়েছে সেখানে।
হুয়াং আরও জানান, এই প্রথায় বিশ্বাসীরা বিশ্বাস করে, কোনো ব্যক্তি যদি তার ইচ্ছা পূরণ না করেই মারা যান, যেমন বিয়ে করা, তারা শান্তিতে বিশ্রাম পাবেন না এবং এ তাড়নায় বারবার ফিরে আসবেন।
উত্তর চীনে, শানসি, শানডং এবং হেবেই প্রদেশে এই প্রথাটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। এই অঞ্চলে সাধারণত দুই ধরনের ভূতের বিয়ে দেখা যায়। এর মধ্যে প্রথমটি হলো, যে দম্পতিরা বাগদানের আগে বা বাগদানের পরে মারা যান, তাদের বাবা-মা বা পরিবারের স্বজনরা তাদের জন্য একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এমনকি তাদের একসঙ্গে কবরও দেওয়া হয়।
আর অন্যটি এমন মৃত ব্যক্তিদের জন্য, যারা জীবিত অবস্থায় কখনোই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি এবং একে অপরকে চেনেনও না। কিন্তু ম্যাচমেকার বা ঘটকের মাধ্যমে মৃত্যুর পর বিয়ে দেওয়া হয় তাদের। মূলত পিতামাতারা তাদের মৃত সন্তানদের জন্য একজন উপযুক্ত সঙ্গী খোঁজেন। এক্ষেত্রে পারিবারিক পটভূমি, পেশা ও বয়স বিবেচনা করা হয়। তারপর একটি বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়, এবং মৃতদেহগুলিকে উত্তোলন করা হয় এবং একটি নতুন কবরে একসঙ্গে সমাহিত করা হয়।
এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে, একটি ভূত বিবাহের একজন সঙ্গী জীবিত থাকেন। তিনি ভূত বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধিত্ব করে তার ছবি এবং পোশাক। অনুষ্ঠানটি ঐতিহ্যবাহী বিয়ের রীতিনীতি অনুসরণ করে হয়ে থাকে।
//এল//