সংগৃহীত ছবি
‘প্রেমে পড়া বারণ’ তো নয়ই, বরং দেশের মানুষরা দ্রুত প্রেমে পড়ুক সেটাই চাইছে জাপান সরকার। আসলে সেদেশে ক্রমশই কমছে প্রজনন হার। ১৯৭৩ সাল থেকে গত পাঁচ দশকে এই হার ২.১-এর উপরে উঠতে পারেনি। ২০২৩ সালে জাপানে জন্মহার সর্বকালীন নিম্নমানে পৌঁছেছে।
এর পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। আর তাই টোকিওর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে একটি এআই-নির্ভর ডেটিং অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছে। বিয়ের দিকে এগোতে এই অ্যাপটিকেই ‘প্রথম ধাপ’ হিসেবে গণ্য করার আর্জিও জানানো হয়েছে। অ্যাপটির নাম ‘টোকিও ফুটারি স্টোরি’।
জাপানে শ্রমিকসংখ্যা এমনিতেই কমে গিয়েছে। তাই জন্মহার যে করে হোক দ্রুত বাড়াতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী কিসিদা। গত বছরের পরিসংখ্যানের পর থেকে উদ্বেগ আরও বড়েছে। আর তাই টোকিওর আঞ্চলিক তথা পুর প্রশাসন যে এই ধরনের ‘ম্যাচমেকিং’ প্রয়াসে অগ্রসর হবে তাতে আশ্চর্য কী! তবে সরকারি ভাবে এমন ডেটিং অ্যাপ তৈরির ব্যাপারটা যে অভূতপূর্ব তাতে সন্দেহ নেই।
ঠিক কীরকম এই অ্যাপটি? এই অ্যাপ ব্যবহার করতে গেলে ইউজারদের একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করতে হবে। যে চিঠিতে বলা রয়েছে, যে তিনি বিয়ে করতে ইচ্ছুক আর সেই কারণে অ্যাপটি ব্যবহার করতে চান। সঙ্গে অবশ্যই আইনত তিনি ‘সিঙ্গল’ বোঝাতে প্রয়োজনীয় নথিও জমা করতে হবে। কেবল এটুকুই নয়। বার্ষিক উপার্জনের হিসেবনিকেষও পরিষ্কার করে জানাতে হবে করের সার্টিফিকেট-সহ।
টোকিও এক সরকারি কর্তা, যিনি ওই নতুন অ্যাপের দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি বলছেন, ”দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ যারা বিয়ে করতে চান তারা সঙ্গী খুঁজতে কোনও অ্যাপ বা ইভেন্টে অংশ নিতে চান না। তাই আমরাই অ্যাপ তৈরি করে তাদের একটু উৎসুক করতে চাইছি।” আসলে জাপানে তরুণ-তরুণীরা বিয়েতে তেমন উৎসাহ পাচ্ছেন না, এই ছবিটা আজকের নয়। কিন্তু এই প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। গত বছর নাকি জাপানে মাত্র ৩০ হাজার বিয়ে হয়েছে। পাশাপাশি লাফিয়ে বাড়ছে বিচ্ছেদের ঘটনা। তাই ‘মরিয়া’ হয়েই এবার অ্যাপ তৈরি করে প্রজনন হার বাড়ানোর প্রথম সোপান তৈরির পথে হাঁটল ‘প্রথম সূর্যোদয়ের দেশ।
//এল//