ছবি সংগৃহীত
ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন এবং সহজেই নাগরিক সেবা প্রাপ্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবস্থাপনা, কর্মপদ্ধতি, শিল্প-বাণিজ্য ও উৎপাদন, অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালনা করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে প্রযুক্তি যেমন করে সহজলভ্য হয়েছে, তেমনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছের প্রযুক্তিনির্ভর সেবা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সব নাগরিক সেবা ও জীবনযাপন পদ্ধতিতে প্রযুক্তি হয়ে উঠেছে এক বিশ্বস্ত মাধ্যম।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মোকাবেলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স উন্নয়ন সূচকে সেরা ৫০টি দেশের তালিকায় থাকার চেষ্টা করছে। এক দেশ এক রেইট কর্মসূচির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে জনগণকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হয়েছে ৫ হাজার ৫০০ ইউনিয়ন। ৫ জি চালু হয়েছে তবে আরো ব্যাপক পরিসরে কাজ করতে আরো কিছু দিন পর। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তরুণরা গড়ে তুলছে ছোট-বড় আইটি ফার্ম, ই-কমার্স সাইট, অ্যাপভিত্তিক সেবাসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে পারলেই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা সঠিকভাবে এগুতে পারব। তাহলেই সম্ভব হবে অতিরিক্ত কর্মক্ষম জনমানবকে কাজে লাগানো আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলা। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে সারাবিশ্ব। সবকিছু যেন হাতের মুঠোয়। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে পদার্পণ করেছি আমরা। বদলে যাচ্ছে আমাদের চিরচেনা সবকিছুই। সামাজিকতা, অফিস কাঠামো, কৃষি, জীবনযাপন থেকে শুরু করে সবই। কম্পিউটার সিস্টেমে কমান্ড দিয়েই মানুষ সবকিছু করছে। আমাদের পুরাতন বিশ্ব ব্যবস্থায় বা ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় শ্রবাজারের চিন্তা করা হতো তার পরিবর্তন হবে। পরে কয়েকশ' মানুষের কাজ হয়তো একটি রোবট করে ফেলবে। কোভিডকালে দীর্ঘ সময়ের মিটিং বা সভার আয়োজন- তা আজ আর হচ্ছে না। আমরা জুমে বা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আামাদের আলোচনা করে ফেলছি। সময়, শারীরিক উপস্থিতি, বিশাল আয়োজন- এসবের প্রয়োজন নেই।
একটি প্রযুক্তি বিপ্লবের সাথে আমরা সময় অতিবাহিত করছি। পরিবর্তন সবসময় অবশ্যম্ভাবী, এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে আমরা শুরু করেছি। সবকিছুতেই আসছে আমূল পরিবর্তন। ঘরে ঘরে বসেই বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালিত করছি আমরা। অনলাইনে অ্যামাজন, আলী বাবা বা রকমারিতে যে পরিমাণ অর্ডার করা হয় তা দেখে আমরা আন্দাজ করতে পারছি ভবিষ্যতে কি হবে। ঘরে বসে অনলাইন বাজারে আমরা পেয়ে যাচ্ছি সব। যে কোনো সেবাও আমরা ক্রয় করতে চাইলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সব পেয়ে যাচ্ছি। প্রথম প্রথম হয়তো কিছুটা মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে বা নানা রকম প্রতিবন্ধকতায় পড়ছি কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সবকিছুতেই অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। আজকের চিকিৎসা বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রযুক্তির যে ছোঁয়া সবখানে লেগেছে তাতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথেই আমরা দিনাতিপাত করছি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের জনসংখ্যা ১৬৯.৮ মিলিয়ন বা ১৬.৯৮ কোটি, যার ২৮ শতাংশ যুবকদের, অর্থাৎ ৪৭.৪ মিলিয়ন (৪.৭৪ কোটি)। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২ শতাংশ কর্মজীবী, বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে এবং এটি ১০৫ মিলিয়ন। মোট জনসংখ্যার এত বিশাল শতাংশ নিয়ে গঠিত যুবকরা যে কোনও দেশের জন্য একটি বিশাল সুযোগ হিসাবে বিবেচিত হবে যদি সেই দেশের প্রতিটি কর্মজীবী-বয়সী নাগরিককে উপযুক্ত চাকরি প্রদান করা যায়। বিশেষ করে, প্রতি বছর চাকরির বাজারে তরুণ-তরুণীরা প্রবেশ করলে তাদের যথাযথ ব্যবহার করা যেতে পারে।
হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান গত শতাব্দীর ৬০ এবং ৯০ এর দশকে জনসংখ্যাগত লভ্যাংশের সুবিধা গ্রহণ করে বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বাংলাদেশের জন্য এই জনসংখ্যাগত সুবিধাকে কাজে লাগানোর উপযুক্ত সময় এটি বেশি দিন থাকবে না। আয়ু বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যাও বাড়বে। প্রশ্ন হল এই বিপুল সংখ্যক যুবককে কীভাবে কাজে লাগানো যায়। দেশের তরুণ সমাজকে বর্তমান বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে চাকরির বাজারে খাপ খাইয়ে নিতে তরুণদের ডিজিটাল প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে।
যুবকদের চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত চাকরি দিতে না পারলে আমরা তা কাজে লাগাতে পারব না। বাংলাদেশে শিক্ষার হার বেড়েছে এবং শিক্ষিত যুবকদের সংখ্যাও অনেক বেশি। যেখানে প্রতি বছর ২.২ থেকে ২.৩ মিলিয়ন যুবক চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, আমরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাকরি দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিক্ষিত বেকারত্বের হার। আমরা যদি এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পারি, তাহলে তা শুধু দেশের উনয়নকেই বাধাগ্রস্ত করবে না, তরুণদেরও হতাশ করবে। তবে দেরিতে হলেও এর দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের শিক্ষিত যুবকরা চাকরি পাবে না এবং শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী আনতে হবে, এটা অযৌক্তিক। তাহলে আমরা কি শিক্ষা দিচ্ছি?
সরকারের প্রধান লক্ষ্য তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কিন্তু সেই লক্ষ্য কতটা অর্জিত হবে এবং কতটা সময়ের মধ্যে হবে, তার ওপর নির্ভর করবে তরুণদের ভবিষ্যৎ তথা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬৫.৫১ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা এই জনসংখ্যাকে কর্মক্ষম হিসেবে বর্ণনা করেন। মাত্র ১৮ ডলার দিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি শুরু হয়েছিলো। ২০৩৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকবে। তারপর বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়তে থাকবে। ২০২২ সালের আদমশুমারি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যা হল ৫.৮৮ শতাংশ৷
দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে স্বল্পশিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। দেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের হার যেমন বাড়ছে, তেমনি উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হারও বাড়ছে। বাংলাদেশে, উচ্চ শিক্ষা অর্থাৎ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে একজন শিক্ষার্থীর জীবনে ১৬ থেকে ১৮ বছর ব্যয় করতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেশনজটের কারণে তিন-চার বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি অনুসারে, দেশে শিক্ষিত লোকদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি, যেখানে ৪৭ শতাংশ শিক্ষিত লোক বেকার। অন্যদিকে দেশে প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমশক্তিতে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু সে অনুপাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে একটা বড় অংশ বেকার থেকে যায়।
আমরা মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত্তি ও গুণগত মান মজবুত না করে একের পর এক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে- যা সার্টিফিকেট প্রদান করেও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এ কারণে বাংলাদেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব থাকা সত্ত্বেও অনেক খাতে উচ্চ বেতনে বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের যুক্তি, দেশে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। তার মানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সময়ের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে এ অবস্থার অবসান ঘটাতে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
বিশ্বে এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা সামনে আসছে। এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা মাথায় রেখেই আমাদের দক্ষ কর্মজ্ঞান সম্পন্ন লোকবল সৃষ্টি করছে সরকার। দেশের মানুষকে কারিগরি ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে দক্ষ করে তুলতে হবে। যাতে তারা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সমান তালে চলতে পারে। দক্ষ জনশক্তি আমাদের দেশের উন্নয়ন খাতে অবদান রাখতে পারবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। আমরা বিদেশের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে হবে।
২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে কর্মরত আছেন। যাদের ৮৮ শতাংশই কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়া অর্থাৎ প্রায় ৭৬ লাখ প্রবাসীর কাজের প্রশিক্ষণ নেই। আর বাকি ১২ শতাংশ প্রবাসী কারিগরি শিক্ষা, ভাষা, কম্পিউটার ও ড্রাইভিং-এ চারটির কোন একটির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রবাসীদের মধ্যে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ডিগ্রিধারীর সংখ্যা খুবই কম।
প্রযুক্তির নানা বিকাশ, শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির রাজত্ব গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক কাঠামোয় এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। এখন বিশ্বব্যাপী কারিগরি জ্ঞানের কদর খুব সহজেই চোখে পড়ে। জনশক্তি খাত থেকে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে বর্তমানে তা আরও কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।
দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে প্রয়োজন শিক্ষা। এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ কারণেই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকতে উচ্চশিক্ষাকে নতুন করে সাজানোর কথা বলা হয়েছে। দক্ষ মানবসম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনপূর্বক যথাযথভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা নতুন করে সাজানো প্রয়োজন এবং তা শুরু করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রমাগত বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আমাদের যোগাযোগের মাধ্যম চারটি রফতানি, আমদানি, বিনিয়োগ ও সাময়িক অভিবাসন। বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ রফতানির চেয়ে অনেক বেশি। তাই দেশে বিনিয়োগ (বিদেশী) বৃদ্ধি ও জনশক্তি রফতানি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার প্রধান উপায়। বিদেশী বিনিয়োগ দেশে বাড়বে তখনই, যখন দেশে থাকবে পর্যাপ্ত উপকরণ, যেমন খনি বা জমি, পুঁজি কিংবা জনশক্তি। অদক্ষ জনশক্তি বিদেশী বিনিয়োগ ততটা উৎসাহিত করে না। এক্ষেত্রে শুধু শ্রমনির্ভর খাতে বিনিয়োগ হবে। বাংলাদেশ কেবল একটি পণ্যই রফতানি করছে। অথচ যেসব দেশে শ্রমিকের দক্ষতা বেশি, সেসব দেশে বাড়ে বিদেশী বিনিয়োগ। জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রেও একই চিত্র। বিদেশে শ্রমিক প্রয়োজন। তবে ক্রমাগত দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা বাড়ছে। অদক্ষ শ্রমিকের চেয়ে দক্ষ শ্রমিক প্রাায় ১০ গুণ বেশি আয় করেন। আর শ্রমিকের দক্ষতা নির্ভর করে শিক্ষার মানের ওপর। তাই শিক্ষার মান পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। গতানুগতিক চিন্তার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না।
বিশ্ব সভ্যতাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। এই বিপ্লবের প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্যতা নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে আমাদের দেশেও। এই আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতা তৈরি বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তুলে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নিরলস কাজ করছেন।
আমরা জানি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হচ্ছে ফিউশন অব ফিজিক্যাল, ডিজিটাল এবং বায়োলজিকাল স্ফেয়ার। এখানে ফিজিক্যাল হচ্ছে হিউমেন, বায়োলজিকাল হচ্ছে প্রকৃতি এবং ডিজিটাল হচ্ছে টেকনোলজি। এই তিনটিকে আলাদা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কী হচ্ছে? সমাজে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে? এর ফলে ইন্টেলেকচুয়ালাইজেশন হচ্ছে, হিউমেন মেশিন ইন্টারফেস হচ্ছে এবং রিয়েলটি এবং ভার্চুয়ালিটি এক হয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে হলে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স, ফিজিক্যাল ইন্টেলিজেন্স, সোশ্যাল ইন্টেলিজেন্স, কনটেস্ট ইন্টেলিজেন্সর মতো বিষয়গুলো মাথায় প্রবেশ করাতে হবে।
হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক।
ইউ