মোঃ মাহমুদ হাসান,সংগৃহীত ছবি
৫৫ বছরের জীবনে শতাধিক ঈদ অভিজ্ঞতায় আমি সমৃদ্ধ। মুসলিম উম্মার জীবনে ঈদ মানে আনন্দ। সম্প্রীতি আর ভালোবাসার মানুষগুলোকে নিয়ে ধর্মীয় ভাব-গম্ভীর পরিবেশে সুখী,দুঃখী,ধনী,গরীব নির্বিশেষে আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেয়াই আমার কাছে ঈদ। স্থান কাল ভেদে ঈদ আনন্দের ব্যারোমিটার উঠানামা করে।
শৈশবের ঈদ আনন্দ যৌবনে খুঁজে পাইনি। বিবাহিত জীবনে ঈদ যেন কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বউ চায় শশুড় বাড়িতে ঈদ করি। আমি চাই ভালোবাসার শৈশবের মাটিতে ফিরে যাই। এই দ্বন্দ্ব সংঘাতে ঈদ আনন্দ তেতো হয়ে যায়। যখন সন্তানের পিতা হই, অনুভূতি ভিন্ন বৈচিত্র্যে রুপ নেয়। আমি চাই, সন্তান আমার প্রিয় মাটিতে প্রিয়জনদের সাথে হেসে খেলে ঈদকে বরণ করবে। স্ত্রী চায়, ঈদ হোক তাঁর প্রিয়জনদের সাথে। শুরু হয় ভাগাভাগি। একবার এদিকে তো অন্যবার সেদিকে। গ্রামে জন্ম, গ্রামের মাটি না ছুঁইলে আমি ঈদ খুঁজে পাই না। নগরের ঈদকে আমার বড় বেশি মেকি মনে হয়। তবুও দাম্পত্য জীবন কে সম্মান জানাতে, এমন কিছু মেকি ঈদও আমার জীবনে এসেছিল। নতুন জামা কাপড়ে বাহ্যিক চাকচিক্য আর মুখে কৃত্রিম হাসির ছোঁয়া থাকলেও, এসব দিনগুলোতে কখনো মনের ঈদ হয়ে ওঠেনি।
আজ আঠারো বছর, পাশ্চাত্যে থাকি। এখানকার ঈদকে কোন ভাবেই দেশ মাতৃকার ঈদের সাথে তুলনার সুযোগ নেই। এখানে কর্মীর কোন ঈদ বোনাস নেই, গনছুটি নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি ছুটি নেই। দৈব চক্রে ঈদটা যদি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হয়, আমেজটা হয় ভিন্ন রকম। আর কর্ম দিবসে ঈদ হলে, বিশেষ অনুমতিতে ছুটি নিতে হয়। অনেকে সেই সুযোগটি গ্রহণ করে, আবার কেউবা মনোবেদনাকে সঙ্গী করে কাজে চলে যায়। তবুও!!!ঈদ মোবারক!!
লেখক:
কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক, কানাডা।
//এল//