
সংগৃহীত ছবি
আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ১৪ বিঘা জমি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
সংবাদমাধ্যমে জানায়, প্রায় ৫৫৯ কোটি টাকার মূল্যমানের এসব জমি জব্দের আবেদনটি করেন দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। তিনি যুক্তি তুলে ধরেন, সাইফুল আলম এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব সম্পদ অন্যত্র স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন, যা অনুসন্ধান শেষ হওয়ার আগেই সম্পদ উদ্ধারের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। তাই আদালতের নির্দেশে এসব সম্পদ জব্দ করা প্রয়োজন।
এর আগে, ২৩ এপ্রিল এস আলম ও তার সংশ্লিষ্টদের নামে ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রায় ১৬০ একর জমি জব্দের আদেশ আসে। আরও ছয় দিন আগে (১৭ এপ্রিল) ১৩৬০টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুদক এস আলম গ্রুপসহ কয়েকটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচার ও দুর্নীতি’ অনুসন্ধান শুরু করে। চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, টাকা পাচার এবং আয়কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময়ে এস আলমের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক অন্যান্য ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া এসব ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এস আলমসহ ৭টি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানা হস্তান্তর স্থগিতের জন্য যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরকে চিঠি দেয়। এক দিন পর সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, এস আলম এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে তারা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ অক্টোবর এস আলম এবং তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩,৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচশো টাকার ১৭৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ আসে। ১২ ফেব্রুয়ারিতে এস আলমের আরও ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ হয়, এবং ২৩ ফেব্রুয়ারিতে তার ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার শেয়ারও অবরুদ্ধ করা হয়।
//এল//