
ছবি সংগৃহীত
নারীর প্রতি বৈষম্য দূর ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে শিরীন পারভিন হকের নেতৃত্বাধীন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। যেসব সুপারিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো দ্রুত কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার কাছে কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘যেসব সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো যেন আমাদের হাতেই সম্পন্ন হয়। আমরা এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই, যাতে বিশ্বজুড়ে নারীরা অনুপ্রাণিত হয়।’
তিনি আরা বলেন, ‘এটা শুধু নারীদের বিষয় নয়, এটা একটি সামগ্রিক সামাজিক সংস্কার। প্রতিবেদনটি শুধু সরকারি দফতরে পড়ে থাকলে চলবে না—এটি বই আকারে ছাপিয়ে জনগণের হাতে পৌঁছাতে হবে, যেন সচেতনতা তৈরি হয়।’
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও পৌঁছাবে প্রতিবেদন
প্রধান উপদেষ্টা জানান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও উপস্থাপন করা হবে, যাতে আসন্ন নির্বাচনের আগেই বিষয়গুলো আলোচনায় আসে এবং অঙ্গীকার তৈরির সুযোগ তৈরি হয়।
‘জুলাই শহীদদের স্মরণে সমাজকল্যাণমূলক সংস্কার’
কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই মাসে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্মরণে আমরা এমন কিছু করতে চেয়েছি, যা সমাজের জন্য বাস্তব পরিবর্তন বয়ে আনবে।’
তিনি জানান, ১৫টি সংস্কার প্রস্তাবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—
১. তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য
২. মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা
৩. পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অধীন বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ
প্রস্তাবে নারী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের দাবি ও আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্যরা
প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন—
-
মাহীন সুলতান (সিনিয়র ফেলো, বিআইজিডি)
-
ফৌজিয়া করিম ফিরোজ (সভাপতি, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি)
-
কল্পনা আক্তার (সভাপতি, গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন)
-
ডা. হালিদা হানুম আক্তার (নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ)
-
সুমাইয়া ইসলাম (নির্বাহী পরিচালক, নারী শ্রমিক কেন্দ্র)
-
নিরুপা দেওয়ান (সাবেক সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন)
-
ফেরদৌসী সুলতানা (সাবেক উপদেষ্টা, এডিবি)
-
নিশিতা জামান নিহা (শিক্ষার্থী প্রতিনিধি)
খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, সম্পত্তির অধিকার, নিরাপত্তা, রাজনীতি, বিচারিক প্রক্রিয়া, মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা এবং গণপরিসরে নারীর অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণে এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউ