
ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে আগামী ১৩ এপ্রিল (রবিবার) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ২০০ ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস প্যালেস্টাইন ফ্ল্যাগ হাতে অংশ নিবে চৈত্র সংক্রান্তির শোভাযাত্রায়। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হবে ‘ব্যান্ড শো’। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদলগুলো।পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আগামী ১৪ এপ্রিল সোমবার ‘শোভাযাত্রা’ বের করা হবে। এদিন বিকালে মানিক মিয়া এভিনিউতে আয়োজন করা হবে ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ এবং ‘ড্রোন শো’। ১৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আয়োজন করা হবে ‘বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’।
বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদোগে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বুধবার ( ৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথভাবে আয়োজিত এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী একথা বলেন।
উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এবছর চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষের শোভাযাত্রা আরও বড় পরিসরে ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে কিছু আকর্ষণীয় ও ভিন্ন আয়োজন রয়েছে। যার অন্যতম তারুণ্যনির্ভর ব্যান্ড সংগীতের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি আর সময়োপযোগী ও ভিন্ন কিছু বার্তা নিয়ে শোভাযাত্রায় শতাধিক শিল্পীর হাজির হওয়া।
উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান যে, “এ বছর পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস অংশগ্রহণ করবে। ব্যান্ড মিউজিশিয়ানরা পৃথিবীর শান্তি কামনায়- বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য সকল শিল্পীরা সম্মিলিতভাবে একটি গান গাইবে। এই শোভাযাত্রায় ঢাকা এবং ঢাকার আশেপাশের সকল মিউজিশিয়ানদেরও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।”
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য আলোচিত হওয়া বা না হওয়া নয়। আমাদের উদ্দেশ্যে হলো জাতির অন্তরে যে গভীর ক্ষত হয়েছে, যা সাংস্কৃতিক বিভাজন এবং ফ্যাসিবাদের ফল, তা উতরানো। ৫৪ বছরের ইতিহাসে শিল্পকলা একাডেমিতে চাঁদরাতে কোনো অনুষ্ঠান হয়নি, এবার হয়েছে। আগামী বছর সারাদেশে সবগুলো শিল্পকলায় এই অনুষ্ঠান হবে। আবার চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষের দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে এরপূর্বে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি, সেটা এবার করা হয়েছে। কারণ উৎসবটা বাংলাদেশের, তাই সবার অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে।’
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি কী, আপনি অন্যের জন্য কী অনুভব করেন এটা কিন্তু বলে দেয় আপনার সংস্কৃতিটা কী। আমরা যে ওদের কথা অনুভব করছি এটা কিন্তু বলে দেয় আমাদের সংস্কৃতিটা কী। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আমরা যদি নববর্ষে শুধু আমাদের দেশের জন্য শুভকামনা করি এরচেয়ে স্বার্থপর আর কিছু হতে পারে না। ফলে এই নববর্ষে আমাদেরকে ফিলিস্তিনে যে ঘটনা ঘটছে তার প্রতিবাদ করে ফিলিস্তিনিদের যেন শান্তি ফিরে আসে এই কামনাটা আমাদের করতে হবে। তাহলেই বুঝা যাবে আমরা এদের জন্য ভাবছি। এর মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিটা কী তা বোঝা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানসের পক্ষ থেকে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের সদস্য শেখ মনিরুল আলম টিপু, ব্যান্ড শিল্পীদের মধ্যে তন্ময়, ফয়সাল, সুমি, পিংকি, শাহান, লিংকন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন।