
ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
নারীরা কর্মসূত্রে বিদেশে গিয়েও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছে। সেখানেও তারা ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছে। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের কারণে কোনো নারীর মৃত্যু হলে এটাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে- যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তিনি এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবির আহ্বান জানান ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য হেনা চৌধুরী।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে অব্যাহতভাবে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য হেনা চৌধুরী এ দাবি জানান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য হেনা চৌধুরী। এছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস, সাংগঠনিক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা টগর, ঢাকা মহানগরের কলাবাগান আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠন উপ-পরিষদের সদস্য সৈয়দা রত্না, ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন কনা, কেন্দ্রীয় এডভোকেসি এবং নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী এবং লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. দীপ্তি শিকদার। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর কমিটির অর্থ সম্পাদক ফেরদৌস জাহান রত্না।
ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না বলেন, বর্তমানে নারী নির্যাতন মহামারির মত আকার ধারন করেছে। বাংলাদেশে শত শত আছিয়া প্রতিদিন অত্যাচারিত হচ্ছে এমতাবস্থায় তিনি বাংলাদেশকে নারীর জন্য নিরাপদ হিসেবে গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
রেহানা ইউনুস বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ,নারী পুরুষের সমতাপূর্ন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আজ থেকে ৫৪ বছর আগে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আমরা বিশ্বাস করি নারী পুরুষের সমতা ব্যতীত দেশের উন্নয়ন ও বিকাশ হতে পারেনা ।
আমরা কাজের অভিজ্ঞতায় দেখছি পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক রীতিনীতি, নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি , ক্ষমতার সম্পর্কে নারী পুরুষের অসম অবস্থান, সিদ্ধান্ত গ্রহন পর্যায়ে নারীর কম উপস্থিতি, নারীর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, নারীর অগ্রসর হওয়ার পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি এসময় তরুণ প্রজন্মের নিকট তাদের পরিশীলিত ও মানবিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, দেশের টেকসই অগ্রগতিকে স্থিতিশীল করতে ধারাবাহিক সংস্কার এর মধ্য দিয়ে ও সুশাসন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশকে নারীর জন্য নিরাপদ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক।
কানিজ ফাতেমা টগর, ঢাকা মহানগরের কলাবাগান আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠন উপ-পরিষদের সদস্য সৈয়দা রত্না, ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন কনা বলেন, দেশে এখনো নারীর চলাফেরা, কাজ এবং পোশাক নিয়ে যে কটুক্তি করা হয় তা কোনভাবেই কাম্য নয়, নারীর প্রতি এরকম বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করে নারীর জন্য নিরাপদ সাইবার দুনিয়া গড়ে তুলতে হবে।
কেন্দ্রীয় এডভোকেসি এবং নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী দেশে প্রতিনিয়ত নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত সকল সহিংসতার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন গত ফেব্রুয়ারী মাসে সারা দেশে ১৮৯ জন নারী নির্যাতনে শিকার হয়েছে তার মধ্যে ৪৮ জনই ধর্ষনের শিকার। এই পরিস্থিতিতে তিনি আইন শৃংখলা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
অ্যাড. দীপ্তি শিকদার দীপ্তি শিকদার,বলেন, আজকে অন্য পরিবারের কেউ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে কালকে যে নিজ পরিবারের কেউ এই ঘটনার সম্মুখীন হবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। পরিবার, জনপরিসরে কোথাও আজ নারীর নিরাপত্তা নেই। নারী নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হলেও মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিতে তিনি ভিক্টিম, তার পরিবার এবং সাক্ষীদাতার নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী, পাড়া কমিটির সদস্য, কর্মকর্তারা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ ৫০ জন উপস্থিত ছিলেন ।
ইউ