ঢাকা, বাংলাদেশ

শুক্রবার, , ১৪ মার্চ ২০২৫

English

জাতীয়

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও গভীর করবে

উইমেনআই প্রতিবেদকঃ

প্রকাশিত: ২০:১২, ১৪ মার্চ ২০২৫

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও গভীর করবে

সংগৃহীত ছবি

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা তহবিলের তীব্র সংকট এবং বৈশ্বিক অগ্রাধিকার পরিবর্তনের কারণে এই সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরের প্রেক্ষাপটে, আমরা বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (আইএনজিও) বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। 
আজ শুক্রবার( ১৪ মার্চ) জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরকালে এই সতর্কবার্তা জানিয়েছেন।
 আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো এক বিবৃতিতে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা অব্যাহত রাখা, উদ্ভাবনী কৌশল গ্রহণ এবং স্থিতিশীল ও মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এখন অত্যন্ত জরুরি। একই সাথে একটি বিশেষ মিশনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে যা এই সঙ্কট সমাধানের পথকে তরান্বিত করতে পারে। 

তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে খাদ্য রেশন অর্ধেকে নেমে আসবে, যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপশি স্থানীয় জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করবে এবং সামাজিক উত্তেজনা তীব্র করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য ও পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য (ওয়াশ), সুরক্ষা, আশ্রয় এবং জীবিকা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যদি দ্রুত ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা না হয়, তবে এই সংকট একটি স্থায়ী ও নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির দিকে অগ্রসর হবে।

এখন অষ্টম বছরে পা রাখা এই সংকট বাংলাদেশের সম্পদের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে দাতাদের প্রতিশ্রুতি কমে আসছে। এই সংকট মোকাবিলার জন্য জাতিসংঘ, বাংলাদেশ সরকার, উন্নয়ন সহযোগীরা, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (আইএনজিও), স্থানীয় এনজিও এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের নিয়মিত সংলাপ অপরিহার্য। বর্তমান ত্রাণ সহায়তার মডেলকে আরও টেকসই, দীর্ঘমেয়াদী ও স্থিতিস্থাপকতাভিত্তিক পদ্ধতিতে রূপান্তর করা দরকার। যেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগণের জন্য জীবিকা, দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সংযোজন করা যাবে। মানবিক সহায়তা, উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমন্বিত ‘ট্রিপল নেক্সাস অ্যাপ্রোচ’ বাস্তবায়ন করতে হবে যা আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

আমরা, আন্তর্জাতিক এনজিও এসিএফ, অ্যাকশনএইড, করডেইড, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড, ড্যানিশ রিফিউজি কাউন্সিল, হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল, ইসলামিক রিলিফ, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি, অক্সফাম, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দ্য চিলড্রেন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন এর পক্ষ থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই যে, সংকট আরও গভীর হওয়ার আগেই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।  আমাদের সময়ের অন্যতম বৃহত্তম শরণার্থী সংকটকে বিশ্ব অবহেলা করতে বা দৃষ্টির আড়ালে নিতে পারে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় পরিস্থিতির অবনতি রোধে জরুরি সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানাচ্ছে। এখনই সময় বৈশ্বিক ও কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের। এতে করে রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠী নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবে এবং তাদের টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত হবে।

এই বিবৃতির সাথে রোহিঙ্গা সঙ্কট সাড়াদান বিষয়ক কৌশলগত নির্বাহী গ্রুপে আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিনিধি এবং ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমান বলেন, "রোহিঙ্গা সংকট শুধু একটি সম্পদের সংকট নয়, এটি রাজনৈতিক সদিচ্ছার সংকটও। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই টেকসই সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে বিনিয়োগ করতে হবে।"

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, "যদি অবিলম্বে এবং কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে রোহিঙ্গা সংকট একটি ভুলে যাওয়া মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হবে। জীবন-জীবিকা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং শিক্ষা নিশ্চিত করাই সংকট সমাধানের মূল চাবিকাঠি।"

অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, "রোহিঙ্গারা শুধুমাত্র পরিসংখ্যান নয়, তারা মানুষ। এই দীর্ঘায়িত সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা বৈশ্বিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাই যেন একটি কাঠামোগত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মিশনের মাধ্যমে টেকসই প্রতিক্রিয়ার পথ খোঁজা হয়।"

যদিও মানবিক সহায়তা অপরিহার্য, তবে এই সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের অধিকার স্বীকৃতি দিতে হবে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে যাতে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা যায় এবং তাদের জন্য টেকসই সমাধানের পথ অন্বেষণ করা যায়, যার মধ্যে পুনর্বাসনের সম্ভাবনাও রয়েছে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, "শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী অর্ধেক মানুষই নারী ও কিশোরী, এবং ৫ লক্ষাধিক শিশু অনিশ্চয়তার মধ্যে বেড়ে উঠছে। যতদিন না আমরা তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পারি, ততদিন বিশ্বকে তাদের পাশে থাকতে হবে।"

হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার সিবগাতুল্লাহ আহমেদ বলেন, "আমরা জোর দিয়ে বলছি, এই সংকট মোকাবিলায় আরও বৃহত্তর সহযোগিতা অপরিহার্য, যাতে শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ পুরো বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় এবং টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পথ প্রশস্ত হয়।"

ড্যানিশ রিফিউজি কাউন্সিলের (ডিআরসি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমিত্রা মুখার্জি বলেন, "আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া, সমন্বয় জোরদার করা এবং পুনরায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা জরুরি, যাতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার দ্বারা পরিত্যক্ত বা উপেক্ষিত বোধ না করে।"

//এল//

রোহিঙ্গাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব করবে জাতিসংঘ: গুতেরেস

একনজরে দেখে নিন আইপিএলের ১০ দলের অধিনায়ক

‘প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে’

‘সংলাপের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রশমনের প্রচেষ্টা চালানোর আহবান’ 

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও গভীর করবে

‘সংস্কার সংক্ষিপ্ত হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে, বৃহত্তর হলে জুনে’

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করলেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস

ক্ষোভে ফুঁসছে মাগুরাবাসী, ধর্ষকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিলো জনতা

বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আরেফিন সিদ্দিক

এবার ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

দেড় ঘণ্টা পর মহাসড়ক ছাড়লেন শ্রমিকরা

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে জাতিসংঘ পাশে থাকবে: গুতেরেস

সবজিতে স্বস্তি থাকলেও চালে অস্বস্তি

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা