ঢাকা, বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার, , ০৬ মার্চ ২০২৫

English

জাতীয়

‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে’

উইমেনআই প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৬ মার্চ ২০২৫

‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে’

ছবি সংগৃহীত

নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের এখনো অনেক পথ হাঁটতে  হবে। এখনো সমাজে নারীবিদ্বেষ আছে, নারীবিদ্বেষী ষড়যন্ত্রকে বিনাশ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি  পারিবারিক রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক ক্ষেত্রে থাকা নারীর অধিকারহীনতাকে দূর করতে শক্তিশালী নারী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান ডা. ফওজিয়া মোসলেম।  

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল ৯ টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আস্তর্জাতিক কনভেশন সেন্টারে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ হতে ইউএন উইমেন এর সহযোগিতায়  বেইজিং ঘোষণা এবং কর্মপরিকল্পনার ত্রিশ বছর পূর্তিতে নারী সমাজের  অগ্রযাত্রা পর্যালোচনা করার জন্য এবং আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের  কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও  সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ আহ্বান জানান।
 
নিজেরা করি-এর সমন্বয়ক খুশি কবিরের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য  দেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশ এর রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং,  বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দিলারা বেগম । 

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাউল সংগীত পরিবেশন করেন শফি মন্ডল ও তার দল।

খুশি কবির আন্তর্জাতিক নারী দিবস এর প্রেক্ষাপট সংক্ষেপে তুলে ধরে বলেন  বিভিন্ন সময়ে নারী আন্দোলনকর্মী, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং নীতিনির্ধারকদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যতো  বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে বেইজিং সম্মেলন অন্যতম। বেইজিং সম্মেলন কেবল অঙ্গীকার না এটি  নারীর অগ্রযাত্রার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের একটি প্ল্যাট ফরম। নারীর অগ্রযাত্রার পথে আমরা কতটুকু হাঁটতে পেরেছি, আরো কত পথ হাঁটতে হবে সে বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য আজকের সভার আয়োজন করা হয়েছে। 

 গীতাঞ্জলি সিং বলেন, নারী আন্দোলন নারী ও কন্যার  ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠায় অন্যতম ভূমিকা পালন করছে। বেইজিং ঘোষণা জেন্ডার সমতা ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি ভিশনারী এজেন্ডা। আজকের সভায় সকল শ্রেণী, বয়স ও পেশার নাগরিক উপস্থিত আছেন, যা বেইজিং ঘোষণার অন্যতম দিক আন্তপ্রজন্মগত সমন্বয়কে উপস্থাপন করে। এই ঘোষণার ৩০ বছর পর এসেও নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এখন ও নারীর প্রতিনিধিত্ব কম।  এই সময় ন্যায্যতা ও সমতাপূর্ণ পৃথিবী গড়তে বেইজিং ঘোষণার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করতে হবে, নারীর ও কন্যার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে, কিশোরীদের অংশগ্রহণ  নিশ্চিত করতে হবে,নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা  নিশ্চিত করতে হবে; সম্মানজনক কাজ নারীর জন্য নিশ্চিত করতে হবে; প্রযুক্তিতে নারীর সমান অভিগম্যতা নিশিচত করতে হবে, পাশাপাশি সুযোগ ও অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে । 

ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আমরা  জানি আন্তর্জাতিক  নারী দিবস পালনের কয়েক দশক অতিক্রান্ত হয়েছে। এই দিবস পালনের  মূল বিষয় সমতা, প্রতিষ্ঠা ও অগ্রযাত্রাকে উদযাপন করা।  অর্জনের উদযাপন, আগামী যাত্রার শপথ গ্রহণ এবং  বিশ্বব্যাপী নারী সমাজের শপথ গ্রহণকে সামনে রেখে এই দিবস  আমরা পালন করে থাকি। তবে  বিশ্ব জুড়ে নারীর প্রতি সহিংসতা থাকলেও পাশাপাশি নারীর শক্তি আজ দৃশ্যমান। এই শক্তিকে এগিয়ে নিতে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, নারীর অপ্রচলিত পেশার সাথে যুক্ত হওয়া ও সফলতা অর্জন ও নারীবান্ধব বহুমুখী এজেন্ডা বাস্তবায়নে ই্উএন উইমেন গঠন নারী আন্দোলনের একটি অর্জন।

দিলারা বেগম বলেন, এবারের ০৮ মার্চ পালনকালে বেইজিং ঘোষণার ৩০ বছর পূর্তি  হচ্ছে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেইজিং ঘোষণা একটি মাইলফলক দলিল। বেইজিং ঘোষণার আলোকে আমাদের অনেক অর্জন আছে তবে নারীর অগ্রযাত্রার পথে এখনো পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা আছে।  নারীর বাল্য বিয়ে একটি জাতীয় সমস্যা। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতার হার এখনো কমেনি। প্রায় ৭০% নারী কোন না কোন ভাবে তার ইন্টিমেট পার্টনারের দ্বারা সহিংসতার শিকার হন। এমতাবস্থায় নারী দিবস পালন আরো সোচ্চার ভাবে করতে হবে; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সামাজিক পরিবর্তন করতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের  সাথে সম্মিলিতভাবে নারীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সামগ্রিক ভাবে চলমান কর্মসূচিকে মূল্যায়ন করে  প্রযুক্তি কে ব্যবহারের মাধ্যমে  নারীর জীবনমান  পরিবর্তন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরো কার্যকর করতে প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে  পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রাগ্রস্বর এর ফওজিয়া খোন্দকার ইভা; অংশ নেন আদিবাসী নারী প্রতিনিধি চন্দ্রা ত্রিপুরা; নারী কৃষক মমতাজ বেগম, দলিত নারী মনি রানী দাস, সম্পূর্ণার প্রতিষ্ঠাতা জয়া শিকদার; বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন নারী শারমিন আকবরী, শিক্ষার্থী শারমিন মিতু, গার্মেন্টস কর্মী সুমি আক্তার এবং নারী উদ্যোক্তা বগুড়ার তাহমিনা পারভিন শ্যামলী। 

বক্তারা  বলেন, চেষ্টা করলে আমরা সবকিছু পারি। নারী কৃষক  আজ জনপরিসরে সহজেই কাজ করতে পারছে বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে। অন্যদিকে দলিত নারীরা, আদিবাসী নারী ও ট্রান্সজেন্ডার  পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দ্বারা জেন্ডার বৈষম্যের শিকার হয়। এই পরিস্থিতিতে তে দলিত নারীদের সচেতন হতে হবে, পাশাপাশি সকল পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর নারীদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, নারীর প্রতি সহিংসতার তথ্যে বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার তথ্য আলাদা ক্যাটাগরি নিশ্চিত করতে হবে। 

পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শেষে  সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং  মানবাধিকার ও নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বিষয়ে দুইটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।  মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. নাসিম আখতার হোসেন ও ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক  ড. সিউতি সবুর। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাস এর উন্নয়ন সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান;  ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক  ড. জারীনা রহমান খান; বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মনিরা বেগম। ব্রিট্রিশ হাইকমিশন, ঢাকা এর সামাজিক উন্নয়ক বিভাগের উপদেষ্টা তাহেরা জাবীন; একশন এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ব্লাস্ট  এর  ফরিদপুর শাখার শিপ্রা গোস্বামী। 

প্যানেল আলোচনা শেষে মিডিয়া বাজার এর উদ্যোগে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র চক্রবুহ্য,লায়লা, ক্রাতি এবং কারমা  প্রদর্শন করা হয়। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন শেষে দলীয় কাজ অনুষ্ঠিত হয়, সঞ্চালনা করেন মাল্টি ডিসিপ্লিনারি আর্টিষ্ট দিবারা মাহবুব। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমী; বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী; মাল্টি ডিসিপ্লিনারি আর্টিষ্ট দিবারা মাহবুব এবং নিজেরা করি এর সমন্বয়ক খুশি কবির। সঞ্চালনা করেন আদিবাসী নারী সংগঠন স্পার্ক এর ডালিয়া চাকমা। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে, নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন আগেও ছিলো এখনো আছে। সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতা বেড়েছে। সহিংসতা প্রতিরোধে নারীদের ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার বিকল্প নেই, বিনিয়োগে গুরুত ¡দিতে হবে, স্বেচ্ছাশ্রম গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে, সাইবার অপরাধ দমনে গুরুত্ব দিতে হবে; জাতীয় হটলাইন নাম্বার  এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে; রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এক তৃতীয়াংশ নিশ্চিত করতে হবে; সংরক্ষিত আসনে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে;  স্থানীয় নারী সদস্যদের  কাজের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, সমকাজে সমমজুরি নিশ্চিত করতে হবে ইত্যাদি।

ইউ

আতিউর-বারাকাতসহ ২৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঈদে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ

নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যাবে না: নাহিদ ইসলাম

শিল্পকলাতে চলছে  ‘জুলাইয়ের বীর কন্যা’ প্রদর্শনী

‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া অভিযান চালানোর অধিকার কারও নেই’

লাইফ সাপোর্টে ঢাবির সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক

হিযবুত তাহরীর সভা-সমাবেশ করলে ব্যবস্থা: ডিএমপি

বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির কারণেই আরো বেপরোয়া অপরাধীরা

চলতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে: নাহিদ

‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে’

২০২৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ৮ বিশিষ্ট ব্যক্তি

ঈদের কেনাকাটা: বাজারে জমজমাট ভিড়

নির্বাচন নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

অর্থপাচার মামলায় খালাস পেলেন তারেক ও গিয়াস উদ্দিন

এনআইডি ইসিতেই রাখা হোক: সিইসি