সংগৃহীত ছবি
বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি পেলেন বাংলা একাডেমি সাম্মানিক ফেলোশিপ ২০২৪ : ১. মঈদুল হাসান (মুক্তিযুদ্ধ), ২. রিচার্ড এম ইটন (ইতিহাস), ৩. অধ্যাপক ডা. সায়বা আখ্তার (চিকিৎসাবিজ্ঞান), ৪. ড. ফেরদৌসী কাদরী (বিজ্ঞান), ৫. সুগত চাকমা (ভাষা গবেষণা), ৬. শহিদুল আলম (শিল্পকলা) এবং ৭. শম্ভু আচার্য (শিল্পকলা)।
আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলা একাডমি প্রাঙ্গণে বাংলা একাডমির সাধারণ পরিষদর ৪৭তম বার্ষিক সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।
শিল্পী ফেরদৌস আরার নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুরসপ্তক’-এর পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়। গত সাধারণ সভার পর থেকে এক বছর দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় বাংলা একাডমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং একাডেমির সচিব মোহাঃ নায়েব আলী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট অবহিত করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
একাডেমির সদস্যবৃন্দ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন। মহাপরিচালক সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদান করেন।
সভায় ২৫ নভেম্বর ২০২৩ অনুষ্ঠিত ৪৬তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী সারাদেশ থেকে আগত একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য ও সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করা হয়।
বাংলা একাডেমি পরিচালিত ছয়টি পুরস্কার( সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, সাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার ২০২৪, আবু রুশদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ এবং রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হয়।
সদ্যপ্রয়াত অনুবাদক ও গবেষক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ‘সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, প্রাবন্ধিক-গবেষক ড. ওয়াকিল আহমদ ‘সাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, শিশুসাহিত্যিক আবু সালেহ ‘কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, নাট্যজন নায়লা আজাদ ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার ২০২৪’, কথাসাহিত্যিক নাসিমা আনিস ‘আবু রুশদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, কথাসাহিত্যিক সুশান্ত মজুমদার (সামগ্রিক অবদানের জন্য) ‘রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ এবং কথাসাহিত্যিক সুমন মজুমদার অনূর্ধ ৪৯ বছর বয়সী লেখকদের মধ্য ২০২৩ সাল প্রকাশিত ‘রাইমঙ্গল’ উপন্যাসের জন্য ‘রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’-এ ভূষিত হয়েছেন।
পুরস্কার ও ফলাশিপপ্রাপ্ত গুণীজণদর হাত পুরস্কারের অর্থমূল্য, সম্মাননাপত্র, সম্মাননা-স্মারক ও ফুলেল শুভেছা তুলে দেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
বার্ষিক প্রতিবদন উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, যে ঐতিহাসিক জনচাহিদায় বাংলা একাডেমির উদ্ভব হয়েছিল, প্রায় সাত দশকের ধারাবাহিকতায় একাডেমি সে চাহিদা অনেক ক্ষেত্র পূরণ করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং কর্তৃত্বের কারণে সাময়িকভাবে হয়তো একাডেমির প্রত্যাশিত পথচলা বিপন্ন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময় আমরা একাডেমির গবেষণাগত পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আকর্ষণীয় গবেষণাবৃত্তি চালু করছি, একাডমির সেমিনারগুলোকে সাধারণ শ্রোতাবান্ধব করা গেছে।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, গত প্রায় সাত দশক ধরে বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও দেশজ সংস্কৃতির বিকাশ তার সাধ্যানুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একাডেমি তার কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও ফেলো, জীবনসদস্য এবং সাধারণ সদস্যদের সমন্বয় একটি বিশাল পরিবারের মতো। নানা বিষয় নানা সময় একাডেমি প্রতিকূলতার মোকাবেলা করছে। আমরা আশা করি, একাডেমিক ঘিরে দেশবাসীর যে বিপুল প্রত্যাশা, সবার সহযোগিতায় আমরা তা পূরণ সক্ষম হবো।
বাংলা একাডেমির সাতচল্লিশতম সাধারণ পরিষদর বার্ষিক সভার কার্যক্রম পরিচালনা করেন একাডমির উপপরিচালক সায়রা হাবীব, কাজী রুমানা আহমদ সামা, ড. সাহদ মন্তাজ, রাকসানা পারভীন স্মতি এবং সহপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মাহবুবা রহমান।
//এল//