ছবি সংগৃহীত
পুলিশের সহায়তায় বসুন্ধরার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নির্যাতনের শিকার শিশু কল্পনাকে। এই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একইসঙ্গে মন্ত্রণালয় বনানীতে ধর্ষণের শিকার দুই শিশুরও দায়িত্ব নিয়েছে।
কল্পনার চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয়েছে ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
এদিকে কল্পনাকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদরকে এক দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। ২০ অক্টোবর (রবিবার) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় গ্রেপ্তার জিনাত জাহান আদরের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওবাদুর রহমান।
শুনানি শেষে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আসামির উপস্থিতিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমীর আদালত এ আদেশ দেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে অমানবিক নির্যাতনের শিকার ১৩ বছর বয়সের কিশোরী কল্পনাকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত তরুণী জিনাত জাহান আদরকে।
কল্পনারা পাঁচ বোন ও এক ভাই। মুঠোফোনে কল্পনার মা আফিয়া বেগম জানান, তার স্বামী শরিফ মিয়া কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। তারা থাকেন সিলেটের হবিগঞ্জে।
মেয়েকে মারধরের অভিযোগে আফিয়া রবিবার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এর অধীনে ভাটারা থানায় দিনাত জাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে কল্পনার সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কমিশনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।
তিনি জানান, মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ গ্রহণ করেছে এবং সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানও জানিয়েছেন, শিশুটির চিকিৎসায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
১৯ অক্টোবর (শনিবার) দুপুরে একাত্তরের কাছে আসে কল্পনার বাঁচার আকুতির একটি ভিডিও ও বাড়ির ঠিকানা। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভাটারা থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে বসুন্ধরার বাসায় যায় একাত্তর টিম। বাসার দরজা খুলতে পুলিশের কাছে বাঁচার আকুতি জানায় কল্পনা।
কল্পনার অভিযোগ, কাজের সামান্য ভুল আবার কখনো বিনা কারণেই অমানবিক নির্যাতন চলতো তার ওপর। কাঠের ব্রাশ দিয়ে মেরে ফেলা দিয়েছে চারটি দাঁত। চুল সোজা করার ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুই হাত। মেরে ভেঙে ফেলা বেতও মিলেছে বাসায়।
নির্যাতনে অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। বর্তমানে কিছুই করেন না। বাসায় এক ভাই ও বন্ধুরা আসে মাঝে মাঝে। বাসার কেয়ারটেকার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, নির্যাতনের বিষয়ে তারা কিছুই টের পাননি।
ইউ