
ফাইল ছবি
অফিসে আবু আজ বেশ চিন্তিত হয়ে বসে ছিল। সকাল থেকে কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল, কিন্তু তার মধ্যে একটুখানি শান্তি ছিল, কারণ অফিসের ইফতারের আয়োজন ভালো হবে, এমন আশা ছিল তার। অফিস থেকে ১০০০ টাকা বরাদ্দ ছিল, যা ইফতারের জন্য ব্যবহারের কথা। কিন্তু বাস্তবে, কিছু খরচ বেড়ে গেছে এবং আবু বুঝতে পারল যে, তাকে কিছুটা সমস্যা সামাল দিতে হবে।
এখন, একদিকে অফিসের ইফতারের খরচ, অন্যদিকে তার নিজের ছোটোখাটো খরচ মেটানোর সমস্যা ছিল। আবু জানত, ইফতার ঠিকভাবে হতে হবে, কিন্তু নিজের জন্য কিছু কেনার উপায় ছিল না। ইফতারের জন্য বরাদ্দ ১০০০ টাকার কিছু অংশ তাকে নিজের খরচের জন্য ব্যয় করতে হয়েছিল।
অফিসের সবার মধ্যে ইফতারের প্রস্তুতির জন্য যখন ব্যস্ততা শুরু হলো, আবু মাথা চেপে বসে রইল। ইফতার কখনো মিস করার বিষয় ছিল না, কিন্তু আজকের পরিস্থিতি তার জন্য একটু কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবু জানত, অফিসের বড় ভাই হায়দার সবসময় সহায়তা করতেন, তাই হঠাৎ করে তার মনে হয়, হয়তো হায়দার ভাই একটু সাহায্য করতে পারবেন।
আবু কিছুটা সংকোচে হায়দারের ডেস্কে গিয়ে দাঁড়াল। হায়দার তখন ফোনে কথা বলছিলেন, তবে একটু সময় নিয়ে আবুকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী আবু, কিছু চাইছিলে?’
আবু একটু হালকা গলায় বলল, ‘ভাই, একটু সাহায্য চাই। অফিসের ইফতার খরচের জন্য টাকা ছিল, কিন্তু কিছুটা নিজের খরচে চলে গেছে। এখন কিছুটা সমস্যায় আছি। ৫০০ টাকা ধার দিলে, ইফতার ঠিকমতো চালিয়ে, তারপর একটু নিজেও চলতে পারব। পরে অবশ্য ফিরিয়ে দেব।’
হায়দার ভাই কিছুক্ষণ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন, তারপর একটু চুপ করে থেকে বললেন, ‘আবু, তুমি চিন্তা করো না। ইফতার ঠিক হবে, আর তোমার জন্যও কিছু ব্যবস্থা করব। আমি জানি, তুমিও চেষ্টা করছো সবাইকে ভালোভাবে খাওয়ানোর জন্য, তাহলে একটু সহায়তা তো করা উচিত।’
আবু অল্প হাসলেন, ‘ধন্যবাদ ভাই, সত্যি কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম।’
হায়দার ভাই তাকে ৫০০ টাকা ধার দিলেন, এবং আবু সে টাকা নিয়ে অফিসের ইফতারের আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করল। কাজ শেষে সবাই একসাথে বসে ইফতার করল, খুশি হয়ে গল্প করল। সামান্য সাহায্য ও ভালোবাসার কারণে সবাই অনেক বেশি আনন্দিত হয়ে গেল।
এদিন আবু জানত, কঠিন সময়ে একটু সহানুভূতির প্রয়োজন হয়, এবং কখনো কখনো সামান্য সাহায্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।
অফিসের অর্থনীতি সম্পর্কে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা করা জরুরি, বিশেষ করে মালিক পক্ষ যদি ইফতারের খরচ নিয়ে ভাবেন। আজকের দিনে অফিসের ইফতার আয়োজনের খরচ একদিকে যেখানে কর্মীদের জন্য উৎসবের অংশ, অন্যদিকে সেটা অফিসের বাজেটের মধ্যে একটি বিশাল দিক হয়ে দাঁড়ায়। যদি মালিক পক্ষ একটু এগিয়ে এসে এই খরচের জন্য সঠিক পরিকল্পনা করেন, তাহলে সেটা শুধু কর্মীদের জন্য নয়, অফিসের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্যও কার্যকর হতে পারে।
যেমন, মালিক পক্ষ যদি অফিসে ইফতারের জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করে, তাহলে সেটা কর্মীদের জন্য সুবিধাজনক হবে। তাঁরা জানবেন, কিছুটা অতিরিক্ত খরচের চিন্তা ছাড়া অফিসের ইফতার সুষ্ঠু ও সুস্বাদু হবে। এমনকি অফিসের মালিক বা ব্যবস্থাপকরা যদি প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেন, তবে সেটা অফিসের সামগ্রিক আর্থিক পরিকল্পনার মধ্যে যুক্ত করা সম্ভব, যাতে কর্মীদের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি হয়।
এছাড়া, মালিক পক্ষ যদি কিছুটা সহায়তা দেয় বা ফান্ড তৈরি করে রাখেন, যার মাধ্যমে কর্মীরা ছোটোখাটো সমস্যার সমাধান করতে পারেন, তা অফিসের আর্থিক সুরক্ষা এবং কর্মীদের মানসিক স্বস্তির জন্য লাভজনক হতে পারে। যেমন, ইফতারের খরচের জন্য একটা ফান্ড রাখা যেতে পারে, যা শুধু প্রয়োজনের সময় কাজে আসবে, এমনকি এই ফান্ডের মাধ্যমে অন্য কর্মীদেরও কিছুটা সহায়তা করা যেতে পারে, যেমন আবুর মতো কেউ যদি ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে আসে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। মালিক পক্ষ যদি ইফতার খরচের জন্য বছরে একটি নির্দিষ্ট বাজেট প্রস্তুত করেন, তাহলে সেটা সারা বছরের কর্মসূচি এবং কার্যক্রমের মধ্যে সঠিকভাবে সমন্বিত হতে পারে, ফলে কর্মীরা বছরে একাধিকবার উৎসবে ও আনন্দে সঙ্গী হতে পারবে। এমনকি, যদি ইফতারের খরচের একটি পরিকল্পিত কাঠামো থাকে, তবে পরবর্তীতে খাবারের মান ও পরিমাণ নিয়েও কোনো প্রশ্ন ওঠবে না, যা অফিসের পরিবেশকে আরও আনন্দদায়ক করবে।
এভাবে, মালিক পক্ষ যদি ইফতারের খরচের বিষয়টি সঠিকভাবে বিবেচনা করে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমাধান নেয়, তাহলে তা শুধু কর্মীদের সুবিধা দেয় না, অফিসের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সামাজিক বন্ধনকেও মজবুত করে তোলে।
ইউ