
সংগৃহীত ছবি
বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরী সমকালতাড়িত, সংবেদনশাসিত, স্বল্পপ্রজ এবং সত্যসন্ধিৎসু একজন কবি। জীবন ও শিল্পে তিনি অবৈষয়িক, আপাদমস্তক নাগরিক এবং শেষপর্বে বিশ্বনাগরিক। পূর্বাপর সমকাল—সচেতনতা ছিল তাঁর মর্মগত। উন্মেষ—পর্বে কোনো দর্শন, মতবাদ কিংবা নির্দিষ্ট কাব্যাদর্শে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন না, তবে শেষপর্বে তিনি মতাদর্শী না হলেও সাম্যবাদের প্রতি গভীরভাবে আস্থাবান ছিলেন।
সমকাল ও চলমান বাস্তবতার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব ও কথামালাই তাঁর কবিতার বিষয়। বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিলেও ফেলে আসা সময়ের জন্য দীর্ঘশ্বাসগুলো কবি লুকাতে পারেননি। তিনি স্বেচ্ছায় তাঁর শতকের সীমাকে বরণ করেছেন জীবনাদর্শে ও কবিতায়।
আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলা ২০২৫—এর ১৮—তম দিনে বইমেলার মূলমঞ্চে ‘বেলাশেষের শহীদ কাদরী’ শীর্ষক আলোচনায় প্রাবন্ধিক তারানা নূপুর একথা বলেন।
। আলোচনায় অংশ নেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করেন হাসান হাফিজ।
আলোচকদ্বয় বলেন, প্রবাসে অবস্থানকালে স্বদেশের চিন্তা কবি শহীদ কাদরীকে তাড়িত করেছে। স্বদেশ তাঁর মানসজগতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে ছিল। তিনি ছিলেন পরিশীলনবাদী এবং ব্যক্তিমানুষ হিসেবে মননশীল। শব্দের ইশারা ও প্রতীকের মধ্য দিয়ে তাঁর কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। গদ্যরচনা ও অনুবাদকর্মেও শহীদ কাদরীর অনুপম দক্ষতা ছিল, তথাপি কবি হিসেবেই তিনি নিজেকে পরিচিত করতে চেয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান হাফিজ বলেন, বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল ও প্রতিভাবান কবি শহীদ কাদরী স্বতন্ত্র কাব্যভাষা নির্মাণের ক্ষেত্রে একজন পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর কবিতার বিষয় ও আঙ্গিক উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা কাব্যজগতে তাঁর কবিতা নিঃসন্দেহে চিরস্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত থাকবে।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি হাসান হাফিজ এবং গবেষক খান মাহবুব।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মো. ফজলুল হক এবং কবি আশিকুল কাদির।
পরিবেশিত হয় মো. মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা’ এবং সবুজ শামীম আহসানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কৃষ্টিবন্ধন’ এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী নোশিন তাবাসসুম স্বরণ, মো. মমিনুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, মো. আলতাফ হোসেন, রুশিয়া খানম, আজিজুল হক খান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন মো. আব্দুস সাত্তার খান (তবলা), এ কে আজাদ মিন্টু (কী—বোর্ড), মো. হাসান আলী (বাঁশি) এবং মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড)।
মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টায় পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ৭৯টি।
বুধবার ( ১৯ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিন।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জন্মশতবর্ষ : রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জুলফিকার শাহাদাৎ। আলোচনায় অংশ নিবেন শাহাবুদ্দীন নাগরী। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টায় পর্যন্ত।
//এল//