সংগৃহীত ছবি
আজি ঝড়ো ঝড়ো মুখরো বাদলও দিনেmজানিনে, জানিনে, কিছুতে কেন যে মনো লাগে না।
আহা মনের এমন উদ্বেলিত আকুতির বহিঃপ্রকাশ যা প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের ক্ষরণ কবিতার মাধ্যমে তুমি ছাড়া আর কে বলতে পারবে, কবি? তুমি যে সার্বজনীন কবি, আমাদের মনের কবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আজ ২৫শে বৈশাখ, তাইতো এমন বাদল দিনে বাংলার কবি, বাঙালির কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পড়েছে, প্রকৃতিও তার মনের অবগাহনের আকুতি আজ বুঝতে পেরেছে। বাংলার রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শে যার সৃষ্টিশীল সৃজনশীলতাকে শানিত করেছে, বাংলার প্রকৃতি আর ষড়ঋতু যার লেখনিকে করেছে অন্তস্পর্শী সহজিয়া। বাংলার এই প্রাণের কবির কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের পরতে পরতে তাই অপরূপা বাংলা আর তার বিচিত্র মানুষের চিন্তামনন আর যাপিত জীবনের নিত্যদিনলিপিতে সুর ছন্দের অপূর্ব মিশেল মানুষকে করেছে পরিপূর্ণ। এবং কবিগুরুর গানের বিশাল ভান্ডার বাংলা ও তার মানুষের জীবনাশ্বর্যকে করেছে ধন্য। প্রেম বিরহ আর জীবনের জয়গানে তুমি জয়তু হে বিশ্বকবি, আমার প্রাণের কবি।
দারুন দহনবেলার এই দিনে তৃষ্ণার জলের আকুতি কতটা মর্মস্পর্শী, শতবছর আগেই বলে গেছেন কবিগুরু। মনগড়া কথায় নয়, রবিঠাকুর তার সৃষ্টিতে প্রকৃতিকে তুলে ধরেছেন প্রকৃত আদলে। গেল কিছুদিন ধরে গ্রীষ্মের খা খা রোদ্দুরে প্রকৃতির ভয়াবহতা, রবিঠাকুরের গানের সুরের অনিন্দ্য সমাহারেও তা স্পষ্ট।
গ্রীষ্ম তার লেখায় অনেকটা স্থান পেলেও, কবিগুরু বলেছেন বর্ষা কবিদের ঋতু। তাই তার সৃষ্টিজুড়েই বর্ষাবন্দনা। সাত সুরের গাঁথুনিতে মিশিয়ে দিয়েছেন প্রতিটি ঋতুর প্রাকৃতিক নির্যাস। তার লেখনিতে বাংলার ৬টি ঋতুর চিত্রকল্প শতক পেরিয়েও প্রতিটি প্রজন্মকে মোহিত করে রেখেছে।
বিশ্বভরা প্রাণের মাঝে বিস্ময়ে তার লেখনি জেগে উঠেছে অসীমতা ও আনন্দে। অজানাকে জানার অনুসন্ধানও কখনো পিছু ছাড়েনি। তার কবিতা ও গানে প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য, এর বিশালতা, সৌন্দর্য, পালাবদল সঙ্গী হয়েছে।
ঋতুপ্রকৃতির স্বরূপ ও পরিক্রমার মাঝেই জীবনের গভীর অনুভব। প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে জীবনের সমান্তরাল রূপান্তরের সূত্রটি তিনি গানের জগতে আবিষ্কার করেন। যাপিত জীবনের দুঃখানুভব, জীবনানন্দ, প্রেমানুভূতি, চিরায়ত সত্যকে গানের সুরে বেঁধেছেন কবি। আছে প্রেম, আছে দু:খ আর সেখানে মিশেছে বিশ্বমানবতার প্রেম সহজ সুরেই।
//এল//