সংগৃহীত ছবি
রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা যখন ৩.৫ এমএমওএল এর চেয়ে কমে যায় তখন ধরে নেওয়া নেওয়া হয় পটাশিয়ামের ঘাটতি হয়েছে। এই সমস্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় হাইপোক্যালেমিয়া বলা হয়। রক্তে এই উপাদানের মাত্রা কমে যাওয়া মানে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে অন্তত ৪৭০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম খাওয়া দরকার।
শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেল ও ইলেকট্রোলাইট পটাশিয়াম। এটি ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোষে-কোষে পুষ্টির যোগান দেয়, পেশি ও স্নায়ুর স্বাস্থ্য বজায় রাখে। পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে মারাত্মক সব স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি হতে পারে প্রাণহানিও।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে পটাশিয়াম। নিয়মিত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্ট ভালো থাকে। অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যা বা অ্যারিদমিয়া রোগ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসার পাশাপাশি পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
পটাশিয়াম কমার লক্ষণ কী কী?
শরীরে পটাশিয়াম কমে গেলে সবসময় ক্লান্ত লাগে। কারণ পটাশিয়াম পেশী সঙ্কুচনে সাহায্য করে। এজন্য পটাশিয়াম কমে গেলে পেশী দুর্বল হয়ে যায়। এটি মাসল ক্র্যাম্পেরও কারণ। পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। হার্টবিট কখনও বেড়ে যায়, কখনও কমে যায়। ফলে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
পটাশিয়ামের অভাবে হাতে-পায়ে ঝিঁঝি ধরতে থাকে ঘনঘন। দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা। পটাশিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে ডাইলিউটেড ইউরিন, পেশিতে প্যারালিসিস, হৃদস্পন্দনের হার বদলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
কিছু সাধারণ খাবার রয়েছে যা রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
কলা
দ্রুত পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে কলার জুড়ি নেই। একটি মাঝারি মাপের কলায় ৪০০ থেকে ৪৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম রয়েছে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি কলা রাখুন।
ডাবের পানি
ডিহাইড্রেশন রোধ করে ডাবের পানি। এতে আছে ইলেকট্রোলাইট যা কোষে-কোষে পানি পৌঁছায়। ডাবের পানিতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি এক্সারসাইজের সময় শক্তি যোগায়। ১ কাপ বা ২৪০ মিলি ডাবের পানিতে দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ১৩ শতাংশ থাকে।
মিষ্টি আলু
১ কাপ বা ৩২৮ গ্রাম মিষ্টি আলুতে রয়েছে দেহের দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ১৬ শতাংশ। তাই খাদ্যতালিকায় এই খাবারটি রাখুন।
বিনস
কলার থেকেও বেশি পটাশিয়াম থাকে বিনসে। ১ কাপ বা ১৭৯ গ্রাম বিনস-এ শরীরে আপনার দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ২১ শতাংশ থাকে। কালো বিনস-এ থাকে শরীরে আপনার দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ১৩ শতাংশ।
পালং শাক
৩ কাপ বা ৯০ গ্রাম পালং শাকে যে পটাশিয়াম রয়েছে তা একজন ব্যক্তির দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ১১ শতাংশ মেটায়। এতে আরও আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ফোলেট ও ম্যাগনেশিয়াম। তাই খাদ্যতালিকায় রাখুন উপকারি এই শাক।
তরমুজ
পটাশিয়ামের ভালো উৎস তরমুজ। ২ টুকরো বা ৫৭২ গ্রাম তরমুজে থাকে শরীরে আপনার দৈনিক পটাশিয়াম চাহিদার ১৪ শতাংশ।
কমলালেবু
পটাশিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস কমলালেবু। একটি কমলালেবুতে প্রায় ২৩০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। তাই পটাশিয়ামের ঘাটতি মেটাতে খেতে পারেন এই ফলটিও।
//এল//