উইমেনইআই২৪ প্রতিবেদক: নারী ক্ষমতায়ন চর্চার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ঢাকায় এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন মিশনে ৯ জন নারী কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত ও সচিব (পূর্ব)–এর দায়িত্ব পালন করছেন। এদের মধ্যে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন সাঈদা মুনা তাসনিম। গণমাধ্যমতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাঈদা মুনা তাসনিম শুরু থেকে তার ক্যারিয়ারের নানাদিক তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিকৌশলে পাস করে বিসিআইসির (বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন) প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন সাঈদা মুনা তাসনিম। একসময় পেশা পরিবর্তনের কথা মাথায় আসলে সরকারি চাকরিজীবী বাবার সঙ্গে আলাপ করেন। তার উৎসাহে বিসিআইসির চাকরি ছেড়ে যোগ দিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ২৭ বছরের অভিজ্ঞতার পর রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম মনে করেন, তার সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল।
সাক্ষাৎকারে নারীর চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘আমি যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দিই, তখন মাত্র ছয়জন নারী সেখানে কাজ করছেন। আনুপাতিক হারে তা মোট কর্মকর্তার মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ এখানে কাজ করতে গিয়ে আমাদের মা–বাবা, স্বামী ও সন্তানদের কাছ থেকে অনেকটা সময় দূরে থাকতে হয়। ফলে কাজ ও পরিবারকে সময় দেওয়ার মাঝে ভারসাম্য রাখাটা খুব কঠিন। তাই পরিবারের জোরালো সমর্থন ও ত্যাগ ছাড়া আমাদের কাজ করা প্রায় অসম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে কখনো আমার মনে হয়নি, আমাকে নারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। বরং আমার মেধা, কঠোর পরিশ্রম ও পেশার প্রতি অঙ্গীকার নিজের অবস্থান তৈরিতে কাজ করেছে। দুই দশকের বেশি সময়জুড়ে বিভিন্ন পররাষ্ট্রসচিব ও জ্যেষ্ঠ সহকর্মীরা আমার এগিয়ে চলায় পাথেয় হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ, তিনি আমাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।’
২০১৪ ও ২০১৫ সালে বঙ্গোপসাগরে জাহাজে করে মানব পাচার এই অঞ্চলের জন্য বড় ধরনের মানবিক সংকট তৈরি করেছিল। এর জের ধরে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে থাইল্যান্ডের বন্দিদশা থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ বাংলাদেশিকে মুক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তাদের সবাই মানব পাচারের শিকার হয়েছিলেন। ভাগ্যবিড়ম্বিত এসব লোককে তাদের আপনজনের কাছে ফেরত পাঠানোটাই বড় পাওয়া বলে মনে করেন সাঈদা মুনা তাসনিম।