ফারহানা নাজনীন: বর্তমানে আমাদের দেশে নারীর ক্ষমতায়নের পরিধি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এরই ধারায় দেশের অনেক বড় বড় কোম্পানির কর্ণধার হিসেবে অনেক নারীর দৃঢ় অবস্থান তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে ‘দিলরুবা তনু’ অনন্য এক উদাহরণ। যিনি ফার্মাসিউটিক্যালে পড়াশোনা করেও আজ স্বনামধন্য ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের একজন কর্ণধার। যার কথা বলছিলাম তিনি মিনিস্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনু।
কথোপকথনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে এমফিল সম্পন্ন করা দিলরুবা তনু সংক্ষিপ্তভাবে তার সফলতার কথা তুলে ধরেছেন।
দেশীয় ইলেকট্রনিক্স বাজারে যখন বিদেশী সব পণ্যের আধিপত্য ছিল তখন মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ। আজ বিদেশী পণ্যের পাশাপাশি দেশী পণ্যেরও চাহিদা বাড়ছে, যা আমাদের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি দিকে অবদান রাখছে। তার মাঝে উল্লেখযোগ্য একটি দিক হচ্ছে-কর্মসংস্থান, মিনিস্টার যখন বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে তখন এদেশের অনেক মানুষের কাজ করার সু্যোগ তৈরি হয়েছে। মিনিস্টার ময়মনসিংহের ত্রিশালে যে বিশাল ফ্যাক্টরি স্থাপন করেছে সেখানে প্রায় ১০০০০ জন লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
লকডাউনের প্রথম দিকে, আমাদের দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা বিবেচনা করে মিনিস্টার গ্রুপ বিপুল পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করে। সামাজিক দূরত্ব মেনেই এসকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও বাজারে যখন নিম্নমানের মাস্কের আনাগোনা দেখা যায় তখন মিনিস্টার দেশের বাহির থেকে সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরির সরঞ্জাম দেশে আমদানি করে নিয়ে আসে এবং মাস্ক উৎপাদন শুরু করে। এরপর এই মাস্ক দুস্থ মানুষের মাঝে বিপুল আকারে বিতরণও করেন তারা। ওষুধ প্রসাশন কর্তৃক অনুমোদিত ৩ স্তর বিশিষ্ট এসব মাস্ক দেশের ফ্রন্ট লাইনার মানুষের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মিনিস্টার ডিজইনফেক্টেড বুথ তৈরি করেছে, যা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ দেশের অনেক স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মিনিস্টার সফলভাবে ভেন্টিলেটর তৈরির প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
কোভিড -১৯-এর মহামারীর পর জনগণের স্বাস্থ্যবিধি এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য মিনিস্টার গ্রুপ বাজারে নিয়ে আসে "মিনিস্টার হিউম্যান কেয়ার” যা মূলত বিভিন্ন স্বাস্থ্য এবং টয়লেট্রিজ পণ্যের সমাহার। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সেফটি প্লাস হ্যান্ড ওয়াশ, সেফটি প্লাস গ্লাস ক্লিনার, সেফটি প্লাস ফ্লোর ক্লিনার, ব্রাইট ওয়াশ ডিটারজেন্ট, চাঁদ ফ্যাব্রিক ব্রাইটনার, চাঁদ ডিশ ওয়াশার, ফ্ল্যাশ টয়লেট ক্লিনার। এছাড়াও মিনিস্টার আরও নতুন সব পণ্যে অতি শীঘ্রই বাজারে নিয়ে আসবে। এসব পণ্য স্বল্প মূল্যের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মিনিস্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনু।
তিনি বলেন, ‘একটি ব্র্যান্ডের বড় হবার পেছনে থাকে বড় একটি স্বপ্ন। আমাদের মিনিস্টার ব্র্যান্ড একটি বড় স্বপ্ন লালন করে আর এই স্বপ্নটি হচ্ছে দেশীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে এক সময় একটি দেশীয় মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং দেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করবে। আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি এবং মানুষের কাছে থেকে আশানুরূপ সাড়াও পাচ্ছি।’
‘দেশের উন্নতির জন্য নারীশক্তিদের অবশ্যই একত্রিত হতে হবে। তাহলেই দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তাই দেশের সকল নারীদের উচিৎ যার যার অবস্থান থেকে পরিবার, সমাজ, দেশের মানুষ তথা সমগ্র দেশের জন্য কাজ করে যেতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আমাদের দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’