
ফাইল ছবি
চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তিতে না যেতে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন, যা তাদের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। বেইজিংয়ের স্পষ্ট বার্তা—যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে যদি কোনো দেশ চীনের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়, তবে সেই দেশের বিরুদ্ধে ‘উপযুক্ত পাল্টা ব্যবস্থা’ নেয়া হবে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই কঠোর বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘আত্মসমর্পণ কখনো শান্তি আনতে পারে না, আর আপস করলে সম্মানও পাওয়া যায় না। আমরা এমন কোনো চুক্তিকে স্বাগত জানাব না, যা চীনের স্বার্থের ক্ষতি করবে।’
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি দেশকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে বাধা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এর বিনিময়ে এসব দেশকে শুল্ক ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। গত সপ্তাহে জাপানি প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটন সফর করেছে, এবং এই সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ভারত, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও চুক্তিতে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপানের অর্থনীতি বিশ্লেষক জেসপার কোল বলেছেন, ‘জাপানের লাভের ২০ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এবং ১৫ শতাংশ চীন থেকে। তাই দেশটি কোন এক পক্ষকে বেছে নিতে চায় না।’
অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন, আর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন। ভারত যদি চুক্তিতে না যায়, তাহলে দেশটিকে ২৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়তে হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন এবং অন্যান্য দেশের জন্যও ১০ শতাংশ বেজলাইন শুল্ক চালু করেছেন, যা জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এতে করে কিছু চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াতে পারে ২৪৫ শতাংশে।
জবাবে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এবং বলেছে, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন বাণিজ্য কৌশল আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে সেই সব দেশগুলোর ওপর, যারা দুই পরাশক্তির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। বিবিসি/চায়না ডেইলি/রয়টার্স
ইউ