
ছবি সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন গড়ে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার আয় করছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) হোয়াইট হাউজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি করেন। তবে এ সংক্রান্ত কোনো বিস্তারিত তথ্য বা প্রমাণ উপস্থাপন করেননি ট্রাম্প।
শুধু ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প বিভিন্ন দেশ, বিশেষত চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ভারত এবং অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ শুরু করেন। ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক নীতি মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে এবং দেশের জন্য অতিরিক্ত রাজস্ব সৃষ্টি করছে। তবে, অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা তার এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের (অর্থ মন্ত্রণালয়) তথ্য অনুযায়ী, কাস্টমস অ্যান্ড সার্টেইন এক্সাইজ ট্যাক্স বিভাগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিট আয় ছিল প্রায় ৭.২৫ বিলিয়ন বা ৭২৫ কোটি ডলার, যা দৈনিক গড়ে প্রায় ২৫৯ মিলিয়ন ডলার। মার্চ মাসে এই হার ছিল দৈনিক গড়ে ২০০ মিলিয়ন ডলার। এর মানে, ট্রাম্পের দাবি করা ২০০ কোটি ডলারের সঙ্গে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের পরিসংখ্যানের বিশাল পার্থক্য রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই দাবির মধ্যে অতিরঞ্জিত তথ্য থাকতে পারে। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের গবেষণা অনুযায়ী, শুল্ক থেকে প্রাপ্ত অর্থের বড় একটি অংশ মার্কিন ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আসে, কারণ আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ানোর ফলে স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ে। এছাড়া, শুল্ক যুদ্ধের কারণে মার্কিন রপ্তানিকারকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, বিশেষত কৃষি ও শিল্প খাতে।
এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি যে কীভাবে তারা প্রতিদিন ২০০ কোটি ডলার আয়ের হিসাব পেয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বাণিজ্যিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। চীন ও ইউরোপের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য সংঘাতের কারণে বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম ও সরবরাহ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে এই নীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্প তার শুল্ক নীতিকে ‘মার্কিন শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা এটিকে ‘অর্থনৈতিক বিভ্রান্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। রয়টার্স
ইউ