সংগৃহীত ছবি
স্পেনের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। ভারী বর্ষণে এখনো দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চল বিপর্যস্ত। অনেক সেতু ও ভবন বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। খবর রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ার কিছু অংশে আট ঘণ্টার মধ্যে এক বছরের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই কারণে সড়ক তলিয়ে গেছে। কৃষিজমি নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মানুষজন গাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। পানির ঘূর্ণায়মান স্রোত সড়ক প্লাবিত করেছে।
ডেনিস হ্লাভাটি নামের একজন বলেন, এখান দিয়ে যেন একটা নদী প্রবাহিত হচ্ছে। দরজা ভেঙে গেছে। আমি ২ মিটার গভীর পানিতে বন্দি অবস্থায় রাত পার করেছি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিতা রবলেস ক্যাডেনা সের রেডিও স্টেশনকে বলেন, একটি বিশেষায়িত সামরিক দল বৃহস্পতিবার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধারকাজ শুরু করবে। তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষিত কুকুরও থাকবে।
নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা আশাবাদী নই।’
প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেছেন, ‘যারা এই মুহূর্তে এখনো প্রিয়জনদের খুঁজছেন, সমগ্র স্পেন আপনাদের সঙ্গে শোক প্রকাশ করছে।’
এদিকে বন্যার কারণে মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনা শহরের ট্রেন বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় স্কুল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাও স্থগিত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত দৃশ্যে দেখা গেছে, আলজিরা শহরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে আটকে পড়া চালকদের দমকলকর্মীরা উদ্ধার করছেন।
ইউরোপের বৃহত্তম ইউটিলিটি আইবারড্রোলার মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি জানিয়েছে, ভ্যালেন্সিয়ায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।
২০২১ সালে এক ভয়াবহ বন্যায় ইউরোপে দুইশত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বন্যার পর এবারের বন্যাকে ভয়াবহ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তবে স্পেনের আধুনিক ইতিহাসে এবারের বন্যা সবচেয়ে মারাত্মক।
//এইচ//