
সর্দিকাশি জ্বর:
শীতের বিদায়, ঘরে ঘরে সর্দিকাশি ঠান্ডা লাগা যা আদৌ বিদায় নিয়েছে কি জীবন থেকে? গত কয়েকমাস ধরে চিকিৎসক মহল এ বিযয়টি নিয়ে চিন্তিত। নানা রোগ নানা ভাইরাাস প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, নানা রকম রোগ ইতিমধ্যে দানা বেধেছে মানুষের দেহে।
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশাল হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান। তিনি বলেন, দীর্ঘস্থায়ি সর্দিকাশি দু:চিন্তার কারণ-ই। কারণ কাশি শুরু হলে থামতেই চাচ্ছে না, শেষ হওয়ার নাম নিচ্ছে না। কাশির চুটে প্রাণ ওষ্ঠাগত। তাই কাশি হলে কি করতে হবে প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, সর্দিকাশি হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ খেতে হবে।
তিনি বলেন, কেননা ঋতু পরিবর্তনের কারণেই জ্বর সর্দিকাশি নতুন কিছু নয়। কয়েক দিনের মধ্যেই মানুষ সুস্থ হয়ে যায়, কিন্তু এবার জ¦র থেকে সুস্থ হলেও পিছু ছাড়ছে না সর্দিকাশি। শিশু, বয়স্ক থেকে মাঝারী, তরুণ-তরুণী সবাই সংক্রমিত হচ্ছে। ঘরে ঘরে ছড়িয়েছে এই কাশি। একই ঘরে একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে।
ডা. জুলফিকার রহমান বলেন, সর্দিকাশি রোগীদের ভীর বাড়ছে হাসপাতালে, চিকিৎসকদের চেম্বারে। কার্যত কফসিরাপ সাধারণ ঔষধেও কমছে না, এই কাশিসর্দি। অনেককেই নিতে হচ্ছে স্প্রে ইনহেলার। উপস্বর্গ সর্ম্পকে তিনে বলেন, জ¦রের পরেই শুরু হচ্ছে শুকনোকাশি।
অনেকের এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যেই কমে যাচ্ছে, আবার অধিকাংশের ক্ষেত্রে ৪-৬সপ্তাহ থাকছে দীর্ঘস্থায়ি হচ্ছে কাশি। কাশির সঙ্গে বুকে ,গলায় ব্যাথা থাকছে অনেকের। কিন্তু কেনো এমন হচ্ছে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন শুকনো থাকার একাধিক কারন।
সংক্রমনের পর শ্বাসযন্ত্রে থেকে যাচ্ছে প্রদাহ। সাইনাসে কফজমেও বিপত্তি ঘটাচ্ছে। অপর দিকে বায়ু দুষনের কারণে শ্বাসনালীতে দীর্ঘস্থায়ি প্রদাহ তৈরি হচ্ছে। পোস্ট কোভিডটের কারনে দূর্বল ইউমিনিটির কারনে ও সংক্রমন বাড়ছে।
সর্দিকাশি নিয়ন্ত্রণ বা কমাতে কি করতে হবে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউমিনিটি বৃদ্ধিপায় এমন খাবার খেতে হবে। আর বাহির হলে মাস্ক পড়ার পরামর্শসহ সকাল সন্ধ্যায় ঘর থেকে বাহিরে না যাওয়া। তিনি বলেন, দু’সপ্তাহের বেশী কাশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন হতে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক, শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ বলেন, শিশুদের সর্দিকাশি জ¦র হলেই অনেক দিন থাকছে। যেসব শিশুদের সর্দিকাশির সঙ্গে জ¦র হচ্ছে তাদের নাক কুসুম গরম পানিতে পরিস্কার পাতলা নরম জাতিয় কাপড় দিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেই সঙ্গে নরমাল স্লাইন দিয়েও পরিস্কার করতে পারেন।
কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে এবং গরম পানির ভাফনিতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই রোগটি এডিনোভাইরাস নামেই পরিচিত। তাই ভিটামিন সি খেতে হবে , সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন অবস্থাতেই ঔষধ সেবন করা যাবে না। সেই সঙ্গে অ্যান্টিহিস্টামিন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।
তবে খুব সামান্য কারণেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। তবে কয়েকটি উপায়ে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত সময়ে সর্দিজ্বর ভাল করা সম্ভব বলে বলছেন চিকিৎসকরা। ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাজেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরের সময় বিশ্রাম নিলে বা বেশি ঘুমালে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব।
সর্দিজ্বরের সময় উষ্ণ পরিবেশে থাকা বা উষ্ণ পোশাক পড়ে থাকলে ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রচুর পরিমাণ পানি বা ফলের রস পানের মাধ্যমে পানিশূন্যতা রোধ করলে ঠান্ডা থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যেতে পারে। ঠান্ডার একটি সাধারণ উপসর্গ গলা ব্যাথা। লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা অথবা লেবু এবং মধু দিয়ে হালকা গরম পানীয় তৈরি করে পান করলে গলা ব্যাথা দ্রুত উপশম হতে পারে।
//জ//