সংগৃহীত ছবি
দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছরেও ঠাকুরগাঁওয়ের শহীদ জায়াদের খবর রাখেনি কেউ। বৃদ্ধ বয়সে তারা আজও কাজ করে চলেছেন জীবীকার তাগিদে। কেউ করছেন অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ আবার কেউ দিনাতিপাত করছেন ভিক্ষাবৃত্তি করে।
থাকছেন ভাঙ্গা বাড়িতে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না অনেকে।
মানবেতর জীবন যাপনের এমন চিত্রের দেখা মেলে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের বেঁচে থাকা অর্ধশত শহীদ জায়াদের পরিবারে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ৪ হাজার শহীদের পরিচয় পাওয়া গেছে। ৪২ টি স্থানে গণহত্যা সংঘঠিত হলেও উল্লেখযোগ্য সদরের জাঠিভাঙ্গা। যেখানে একই স্থানে প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। সেই সময় মাইকিং করে ভারতে পাঠানোর কথা বলে নিরীহ বাঙ্গালিদের শুকানপুকুরি ইউনিয়নের জাঠিভাঙ্গা এলাকায় পাথরাজ নদীর তীরে একত্রিত করে রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। পরে নারী ও শিশুদের চোখের সামনে ব্রাশ ফায়ার করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় পুরুষ ও যুবকদের।
দেশ স্বাধীনের পরে স্বামী হারানো জায়ারা বাবা হারানো শিশুদের নিয়ে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চকহলদি ও জগন্নাথপুর এলাকায় অর্ধশত শহীদ জায়া এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন সে সংগ্রাম। র্দীঘদিনেও তাদের সরকারি ভাবে সহায়তা না করায় হতাশ তারা।
ঠাকুরগাঁওয়ের গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ জাদুঘর ট্রাস্টের গবেষক ফারজানা হক বলেন, ঠাকুরগাঁও সদরের চকহলদী এলাকায় বিধবা পল্লীতে জাঠিভাঙ্গা গণহত্যায় শহীদদের প্রায় ৫০ জন বিধবা এখনও বেঁচে আছেন, তারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্বাধীনতার ৫ দশক পড়ে এসেও এই বিধবারা কোথাও সরকারি বা বেসরকারি কোন সহায়তা পাননি তা ভাবতেই অবাক লাগে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে শহীদ জায়াদের জন্যে যেসব প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তার বাস্তবায়ন আদৌ হয়নি এখানে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান জানান, আমাদের এসব তথ্য জানা ছিলনা। দেশের জন্যে যারা জীবন দিয়েছে তাদের জায়াদের এমন অবস্থা সত্যিই মেনে নেওয়ার মত না। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দ্রুত সহযোগীতার ব্যবস্থা করছি এবং শহীদ বিধবাদের জন্য সবসময় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।