সংগৃহীত ছবি
শীতকালে হরেক রকমের পিঠার আয়োজন হয়, কিন্তু খেজুর গাছের বিলুপ্তিতে সে রস আর মিলেনা। ফলে নানা রকমের পিঠার বাহার আর চোখে পড়েনা। শীতের শুরতেই রসের কলসি নিয়ে বিক্রেতা আর চোখে পড়েনা। কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। বিশেষত: চট্টগ্রাম - দোহাজারী রেল লাইনের দু’ধারে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। এখন কিছু কিছু খেজুর গাছ থাকলে তা সংরক্ষন করাটা যেন আমরা গরজ মনে করছিনা। আশি বছরের বৃদ্ধ ফুল মিয়া বলেন, বাবা আমরা এক আনা দিয়ে এক কলসি রস কিনেছি। এ রস দিয়ে খেজুরের গুড়, ভাপা পিঠের আয়োজর এক মহোৎসব চলতো, এখন এ কথা যেন কল্প কাহিনী।
এখন প্রতি কেজি রসের দাম ৮০-৯০-টাকা। ক্ষেত্র বিশেষে ১শ টাকা। চন্দনাইশের পাহাড় ঘেরা জনপদ ধোপাছড়ি এবং দোহাজারীতে বেশ খেজুর গাছ পরিলক্ষিত হয়। শীতের শুরতেই খেজুর গাছ কেটে রসের সন্ধানে গাছিরা তৎপর। গ্রামীন এতিহ্য রক্ষায় ও রসের চাহিদা মেটাতে দোহাজারীর নজরুল ইসলাম এক যুগ আগে খেজুরের বাগান করেছে মায়ামার দিঘীর উত্তর পাড়ে পুকুর খনন করে খেজুর বাগান রচনা করেছেন। বর্তমানে অর্ধ শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে তার বাগানে ।
খেজুর বাগান থেকে নিত্য নিত্যদিন ৪০-৫০ কেজি খেজুর রস আহরন করে থাকেন। প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা বিক্রি করছেন তিনি। রস সংগ্রহ প্রতিদিন গাছের উপরের কিছু অংশ কাঠার জন্য মজুরী বাবদ অনেক অর্থ তার ব্যয় হয়। তবু নেই তার মধ্যে হতাশার চাপ, এলাকায় রস সরবরাহ দিতে সে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। তবে লোকসান যায়না, লাভেই হয়। ৬০ বছরের জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা এখন অলস হয়ে গেছি। দোকান হতে বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় ক্রয় করে খাই, কিন্তু মহান রব্বুল আলমীনের অপূরন্ত নেয়ামত খেজুরের রস আহরনে প্রচষ্টা আমাদের নেই। যে সব খেজুর গাছ আছে, সেগুলো ও রস আহরনের জন্য পরিচর্যা করছি না, কিভাবে সে নেয়ামত পাব?
চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি অফিসার আজাদ হোসেন বলেন, খেজুর রস ও গুড় এদেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুড় মুড়ি খেতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। আমাদের চতুরদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক খেজুর গাছ, সেগুলোকে পরিচর্যা করা প্রয়োজন। গ্রাম বাংলার উৎসব ফেরাতে আমাদের কে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি খেজুর গাছের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিৎ।
//এল//