সংগৃহীত ছবি
দূরত্ব অল্প, তবুও যানজটের কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে রাজধানীবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর এ দুর্ভোগে প্রতিদিন প্রায় ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।
বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি ঢাকা পরিবহন কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সেমিনারে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহন ও নিরাপদ হাঁটাকে উৎসাহিত করতে এদিন সকালে হাতিরঝিলে সাইকেল র্যালির আয়োজন করে ডিটিসিএ। সে সময় বন্ধ ছিল প্রাইভেটকার চলাচল।
দুপুরে ডিটিসিএ ভবনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহছানুল হক।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ঢাকা শহরে দেখা যায়, একটি শিশুর জন্য একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে। ফলে যানজট বাড়ছে। আর গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়লেও শৃঙ্খলা না থাকায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। একটি সড়ককে যেন সপ্তাহে এক দিন গাড়িমুক্ত রাখা যায়, সে জন্য সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
তিনি বলেন, গাড়িভিত্তিক উন্নয়নের দুষ্টচক্রে সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভার বাড়ছে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে সড়কে গাড়ি বাড়ায় যানজট ও দূষণও বাড়ছে।
আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে নগর এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করা, ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। একইসঙ্গে কার ফ্রি স্কুল জোন গড়ে তোলা, পথচারীবান্ধব রাস্তা তৈরি, বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের সেবা ও পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত মোট মোটরযানের মধ্যে গণপরিবহন মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যক্তিগত গাড়ির অনুপাতে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ছে না। জনবান্ধব নগর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত করে বহু মাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসান, ডিটিসিএ’র ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার কে. এম. তৌফিকুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ৩৩টি দেশের প্রায় ১ হাজার শহরে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার শহরে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
//এল//