
ছবি সংগৃহীত
"জানি পথ দুর্গম তবু চলো দুর্দম"- এই শ্লোগানকে ধারণ করে উদযাপিত হলো সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক নেতা, উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা, শিল্পীসংগ্রামী সত্যেন সেন-এর ১১৮তম জন্মবার্ষিকী ।
(২৮ মার্চ (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টায় সত্যেন সেন চত্বরে (জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে) আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সত্যেন সেন-এর প্রতিকৃতির সামনে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা জানান উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দ। এরপর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ পর্বে বক্তব্য দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি শিবানী ভট্টাচার্য্য, প্রবীর সরদার এবং উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। অমিত রঞ্জন দে বলেন, একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে দেশ। স্বৈরাচারের পতন হলেও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। বৈষম্যমুক্ত, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার পথ যত দুর্গম হোক না কেন, দুর্দম গতিতে সেই পথে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এ পর্বে বক্তারা, সত্যেন সেনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর দেখানো পথে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ, মৌলবাদমুক্ত, শোষণহীন, সাম্যবাদী সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আজীবন লড়াই-সংগ্রাম চালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, ১৯০৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করা সত্যেন সেন আজীবন সত্য, সুন্দর, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই নানা ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। এছাড়াও, কৃষক আন্দোলনেরও অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন সত্যেন সেন। একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ, মৌলবাদমুক্ত, সাম্যবাদী সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর সত্যেন সেন ও রণেশ দাশগুপ্তসহ বেশ কয়েকজন প্রগতিশীল মুক্ত চিন্তার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বহু বছরের লড়াই-সংগ্রাম ও ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ গণসাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উদীচী। বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে যখন বাংলা ও এই ভ‚খণ্ডের আবহমান সংস্কৃতির উপর নতুন করে আঘাত এসেছে, যখন ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে, তখন সত্যেন সেনের আদর্শ সঠিক পথ দেখাবে। আর তাই, সত্যেন সেনের দেখানো পথে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ, মৌলবাদমুক্ত, সাম্যবাদী সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আজীবন লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে উদীচী।
অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সঙ্গীত বিভাগের শিল্পীরা। এছাড়া, একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন জয়া সেন গুপ্তা, কল্পনা খান ও প্রথমা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিখা সেন গুপ্তা ও আতিকুজ্জামান মিজা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শেখ আনিসুর রহমান। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ এবং ঢাকা মহানগর সংসদের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।