ফাইল ছবি
ঢাকাই সিনেমার চিরসবুজ নায়ক জাফর ইকবাল। আশির দশকেই তিনি যে ফ্যাশন, স্টাইল দেখিয়েছেন, তা ছিল অভাবনীয়। সমসাময়িক নায়কদের চেয়ে তিনি ছিলেন অনেকটা এগিয়ে। তার ভক্তরা আজো তার কথা স্মরণ করে। বাংলায় সিনেমায় তিনি স্টাইলিশ নায়ক হিসেবে পরিচিত। জাফর ইকবাল তার সময়ের অনেক নায়িকার সঙ্গেই জুটিবদ্ধ হয়ে সিনেমায় কাজ করেছিলেন। তবে ববিতার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিলেন। তারা প্রায় ৩০টি সিনেমায় জুটি হয়েছিলেন। যার সুবাদে দু’জনের মধ্যে চিল চমৎকার এক রসায়ন।
সেই সম্পর্ক কী শুধুই পেশাদারিত্বেই সীমাবদ্ধ ছিল নাকি ভালোবাসায় রূপ নিয়ে ছিলো স্বয়ং চিত্রনায়িকা ববিতাই এক সাক্ষাৎকারে তা ভক্তদের পরিষ্কার করে জানিয়েছেন।ববিতা বলেন, ‘জাফর ইকবালকে ভীষণ পছন্দ করতাম। খুবই স্মার্ট, গুড লুকিং ছিল সে। আমি তাকে ভালোবাসতাম, সেও আমাকে ভালোবাসত। শুটিংয়ের অবসরে অথবা নানা আড্ডায় আমাকে গান শেখাত। আমরা দুজন গিটার বাজিয়ে ইংরেজি গানের চর্চা করতাম।’
বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে ববিতা অনেক কিংবদন্তির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলেও তার পছন্দের নায়ক জাফর ইকবাল। ববিতা বলেন, ‘অনেক বড় বড় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক ভাই, ফারুক, সোহেল রানাসহ আরো অনেকের অভিনয়ে আজও মুগ্ধ হয়েছি। ভারতের সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও অভিনয় করেছি। কিন্তু আমার পছন্দের নায়ক ছিল জাফর ইকবাল। তার কিছু জিনিস আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করত। তিনি সুদর্শন ছিলেন। তার অভিনয় সাবলীল। তার কণ্ঠ, ব্যক্তিত্ব, ফ্যাশন সচেতনতা, রুচিবোধ চমৎকার। খুব ভালো ইংরেজি গান গাইতে পারতেন। গিটার বাজিয়ে ওর মুখে ইংলিশ গান শোনাটা আমাদের সময়কার যেকোনো মেয়ের জন্য স্বপ্নের একটি মুহূর্ত। ওর মতো পরিপূর্ণ কোনো নায়ক আমাদের চলচ্চিত্রে আসেনি।’কোনো এক কারণে ভেঙে যায় জাফর ইকবাল ও ববিতার প্রেম। ওই সময়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, ববিতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যান জাফর ইকবাল। যা তার পারিবারিক জীবনেও প্রভাব ফেলে। পরবর্তীতে মদ্যপানসহ অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত হন এ নায়ক এবং ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান তিনি। উল্লেখ্য, জাফর ইকবাল ক্যারিয়ার শুরুটা গান দিয়ে। ‘রোলিং স্টোন’ নামে একটি ব্যান্ডও ছিল তার। পরবর্তীতে তিনি সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে। ১৯৬৯ সালে ‘আপন পর’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে পর্দায় অভিষিক্ত হন। এরপর দেড় শতাধিক সিনেমায় কাজ করেন।
ইউ