
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাংক রেজোলিউশন অ্যাক্ট কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এছাড়া, আগামী এপ্রিল থেকে খেলাপি ঋণ (নন-পারফর্মিং লোন বা এনপিএল) শ্রেণিবদ্ধ করার সময়সীমা ছয় মাস থেকে কমিয়ে তিন মাসে আনা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং মানদণ্ড বেসেল-৩ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে ২০০৭-২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর এই মানদণ্ড প্রণয়ন করা হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে রয়েছে, যার একটি শর্ত হচ্ছে খেলাপি ঋণ কমানো।
গত বছরের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন টাকা, যা মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল থেকে এনপিএল শ্রেণিবদ্ধ করার কঠোর মানদণ্ড চালু হলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্রুত বাড়বে।
অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, অতীতে বড় ঋণগ্রহীতাদের জন্য কিছু ব্যাংক খেলাপি ঋণ গোপন করেছিল, কিন্তু এখন সেই প্রথা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, নতুন মানদণ্ড চালু হলে খেলাপি ঋণ প্রায় ৩০ শতাংশ হতে পারে।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন এবং তারা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিছু ব্যাংক ইতোমধ্যে একীভূত হয়েছে, তবে ব্যাংক রেজোলিউশন অ্যাক্ট চালু হলে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা ব্যাংক লুটপাটের অভিযোগ ওঠার পর বর্তমান সরকার ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন এবং শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, নতুন পদক্ষেপগুলো ব্যাংকিং খাতকে সুসংহত এবং স্থিতিশীল করে তুলবে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হবে। নিক্কেই এশিয়া
ইউ