সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে জেন্ডার সমতাকে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএন উইমেনের ৪.৮ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি
মঙ্গলবার( ২১শে জানুয়ারী) বাংলাদেশে পাবলিক স্পেস, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএন উইমেন ঢাকার ইইউ অফিসে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এই প্রকল্পটি নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০)-এর লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে একটি সহিংসতামুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
এটি জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মোকাবিলার কৌশলগুলোকে একীভূত করবে। প্রকল্পটি বিশেষত পাবলিক স্পেস, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি এবং যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করবে।
এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ সরকারকে, তার আন্তর্জাতিক জেন্ডার সমতা এবং মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করবে। প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউর সুপারিশমালা, নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের কনভেনশন (সিডো) এবং নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এর পাশাপাশি, এই প্রকল্পটি নারী ও মেয়েদের প্রতি সকল প্রকার বৈষম্যের অবসানের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সূচক ৫.১.১ অর্জনে অবদান রাখবে।
ইইউর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা এবং গত পাঁচ বছর ধরে চলমান ইউএন উইমেনের জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে, এই ৪.৮ মিলিয়ন ইউরো অনুদানের প্রকল্পটি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ফোকাস করবে- পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে, নীতি ও সিস্টেমের মাধ্যমে সহায়ক পরিবেশকে শক্তিশালী করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান, সম্পদ এবং অনুশীলনের উন্নয়ন; ক্ষতিকারক সামাজিক ও জেন্ডারভিত্তিক নিয়ম এবং অভ্যাস পরিবর্তন এবং; সুশীল সমাজ ও নারী অধিকার সংগঠনের এজেন্সি এবং নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব নিশ্চিতকরন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার বলেন, “জেন্ডার সমতা উন্নয়ন এবং নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা দূর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য ইইউ-এর প্রতিশ্রুতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই উদ্যোগ। এটি এমন একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে নারী ও মেয়েরা হয়রানি বা বৈষম্যের ভয় ছাড়াই উন্নতি করতে পারবে। ইউএন উইমেনের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে এবং বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য প্রত্যাশা পূরণে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে পেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গর্বিত।”
সমর্থন ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইউ এন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, "এই বছর নারী বিষয়ক চতুর্থ বিশ্ব সম্মেলন এবং বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফর্ম গ্রহণের ৩০তম বার্ষিকী, যা নারী অধিকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, বৈষম্যমূলক নিয়মকানুন মোকাবেলা এবং সুশীল সমাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে, বাংলাদেশে জেন্ডার সমতাকে বাস্তবে পরিণত করায়- ইউএন উইমেনের কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে ইইউর এই সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের সকল নারী ও মেয়েদের জন্য সহিংসতা ও বৈষম্যমুক্ত ভবিষ্যৎ তৈরিতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএন উইমেনের শেয়ার্ড কমিটমেন্টকে জোরদার করবে।
//এল//