উদ্যোক্তা শায়লা,সংগৃহীত ছবি
জীবনের সব কিছুই অনিশ্চিত। কখন কি হবে, তা বলা মুশকিল। কখনো ভাবেননি চাকরি ছাড়া কিছু করবেন। কিন্তু তিনিই হয়েছেন উদ্যোক্তা। চাকরির নানা সমস্যা সামলে উঠতে না পেরে, নিজেকে গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা হিসেবে। বলছিলাম চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা শায়লার কথা।
শায়লায় জন্ম রাজধানী ঢাকার বাসাবো এলাকায়। ঢাকাতেই বেড়ে উঠেছেন ছোটবেলা থেকে। পড়ালেখা করেছেন ইডেন কলেজে। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে থাকা শুরু করেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায়। সমাজবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করা শায়লা এরই মধ্যে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। সে চাকরিতে বেতনসহ নানা ঝামেলা শুরু হয় শায়লার। ভাবেন একটি ব্যবসা শুরু করবেন। সেই ভাবনা থেকেই শায়লার যাত্রা শুরু। চাকরি ছেড়ে হয়ে যান উদ্যোক্তা।
উদ্যোক্তা প্লাটফর্ম উই’সহ নানা প্লাটফর্ম থেকে ব্যবসার বিভিন্ন জিনিস জেনে শুরু করেন পথচলা। দ্যা ক্লথিং কোম্পানি নামের একটি ফেসবুক পেজ দিয়ে গত বছর নারীদের পোশাক বিক্রি শুরু করেন শায়লা। শায়লার পোশাকের গুণগত মান ও আধুনিক ডিজাইন হওয়ায় দ্রুতই সাড়া পান তিনি। ক্রেতাদের কাছে এক আস্থার নাম হয়ে উঠে শায়লার দ্যা ক্লথিং কোম্পানি।
অনলাইনে ব্যবসা করতে গিয়ে নানা সময় নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন সে। বাইরে থেকে কাপড় আনার সময় কখনো কখনো কাপড় নষ্ট থাকতো, যা আর বিক্রি হয়নি। কখনো ক্রেতারা অর্ডার দিয়ে পণ্য গ্রহণ করেননি। এতে করে লোকসানের মুখে পড়েন তিনি। তবে সাহস হারাননি। সাহস নিয়ে শায়লা এগিয়ে যান এবং সফলও হন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শায়লা পরিচিত হয়ে ওঠার পর বাইরে থেকে নারীদের পোশাক আমদানি শুরু করেন। পাকিস্তান, কাশ্মীর, ভারতসহ বাইরে থেকে নারীদের লেটেস্ট মডেলের সব পোশাক আনতে থাকেন তিনি। এসব পোশাক বিক্রিও হয়ে যায় দ্রুত। এরপর তিনি একটি শো-রুম দেওয়ার কথা ভাবেন।
২০২৩ সালে মোহান্মদপুরের রিং রোডে শায়লা খুলে বসেন তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান দ্যা ক্লথিং কোম্পানি। প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ব্যবসা হয় শায়লার। বর্তমানে একজন কর্মচারী রয়েছে। তবে দ্রুতই আরও কয়েকজন নিয়োগ দেওয়া হবে। তার বেশিরভাগ ব্যবসা শুধু বিদেশি পণ্য থেকেই হয়। যেখানে গ্রাহকদের ভীড় লেগে থাকে সবসময়। বর্তমানে অফলাইন-অনলাইন উভয়দিক দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এই যাত্রায় তাকে সবসময় সাপোর্ট দিয়েছেন তার মা। শায়লা বলেন, বেসরকারি চাকরি করতে আমার বেশ চাপ হয়ে যেতো। বেতনসহ নানা ঝামেলা হতো। এরপরই ভাবি, উদ্যোক্তা হবো। সেই থেকেই কাজ শুরু করি। আমার এ যাত্রায় মা আমাকে সাপোর্ট না দিলে এতদূর আসতে পারতাম না। আমি আমার মায়ের প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ। অনেকের ভালোবাসায় এখন এগিয়ে যাচ্ছি। আমার দ্যা ক্লথিং কোম্পানির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
//এল//