নারী উদ্যোক্তা ছাদ বাগান চাষী গৃহবধূ আয়েশা আশরাফী,সংগৃহীত ছবি
ছাদ বাগানের গাছের ফল দিয়ে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গাছের চারা বিক্রি করে মাসে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় করেন আয়েশা।
বলছিলাম ফরিদপুরের নারী উদ্যোক্তা ছাদ বাগান চাষী গৃহবধূ আয়েশা আশরাফীর কথা।
ছোট থেকেই গৃহবধূ আয়েশা আশরাফীর গাছের প্রতি বেশ ভালোবাসা। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে পাশ করে ঘরে বসে থাকেননি। তিনি পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা বিবেচনা করে ২০১৯ সালে প্রথমে বাড়ির ছাদে সবজি ও ফল চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই দারুণ সফলতা পেয়ে তিনি ছাদ বাগান শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।
ফরিদপুর শহরের গৃহলক্ষীপুর এলাকায় তার বাগানের গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা বর্ণিল ফল। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করছেন তিনি। অল্প দিনের ব্যবধানে ছাদ বাগানের থেকে আয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আয়েশা।
তার ছাদ বাগানের সাফল্য দেখে অনেক নারীই এখন এ ধরনের কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকেই তার কাছ থেকে পরামর্শ ও সহয়তা নিচ্ছেন। তিনি পরিশ্রম করে ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের দিক দিয়ে প্রতিবেশী নারীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছেন।
ছাদ বাগানের উদ্যোক্তা আয়েশা আশরাফী বলেন, মাত্র পাঁচটা ফলের গাছ দিয়ে আমার ছাদ বাগানের যাত্রা শুরু করি। সেই গাছগুলোতে যখন আমি ভালো ফল পাই, তারপর থেকে আমার পুরো ছাদে গাছ লাগাই। আমার ছাদে এখন প্রায় সবই ফলের গাছ।
এখন আয়েশার ছাদ বাগানে প্রায় ২০০টি ফলের গাছ শোভা পাচ্ছে। সবই উন্নত জাতের এবং বেশিরভাগই বিদেশি।
এর মধ্যে মিসরীয় তিন ফল, রেড প্যালেস্টাইন তিন ফল, সৌদি ইয়োলো, দার্জিলিং কমলা, কাশ্মীরি আপেল কুল, থাই জাম্বুরা, থাই সফেদা, থাই মিষ্টি তেঁতুল, থাই বারোমাসি আমড়া, পাকিস্তানি আনার, অস্ট্রেলিয়ান আনার, মেক্সিকান আনার, ভাগুয়া আনার, থাই আনার, ড্রাগন, চায়না থ্রি লেবু, ফিলিপাইন ব্ল্যাক আখ, কদবেল, থাই শরিফা, অরবরই, মিষ্টি জলপাই অন্যতম।
এ নারী উদ্যোক্তা বলেন, গাছ থেকে গ্রাফটিং ও গুটি কলমের মাধ্যমে চারা করি। আমার গাছের চারাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করি। কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারাগুলো পৌঁছে দিই। গাছের ফল দিয়ে আমার পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রি করি। গাছের চারা বিক্রি করে আমার মাসে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় হয়।
ছাদবাগানে যে সার ব্যবহার করা হয়, সেটিও নিজেই তৈরি করেন আয়েশা আশরাফী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি কিচেন কমপোস্ট তৈরি করে গাছে দিই। এ ছাড়া গোবর সার, খৈল, পানি, কলার খোসা, ডিমের খোসাসহ বিভিন্ন দ্রব্য ব্যবহার করে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করি। গাছগুলো আমার সন্তানের মতো। প্রতিনিয়তই গাছের পরিচর্যা করতে হয়। পরিচর্যার ওপর গাছের সুস্থতা বৃদ্ধি এবং অধিক ফলন নির্ভর করে।
//এল//