ছবি: ‘নারীপক্ষ’র আয়োজনে ‘ন্যায্য মজুরির লড়াইয়ে নারী সমাজ’ বিষয়ক অবস্থান কর্মসূচিতে....
‘নারীপক্ষ’র আয়োজনে ‘ন্যায্য মজুরির লড়াইয়ে নারী সমাজ’ বিষয়ক অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ন সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় নারীপক্ষ’র আয়োজনে সাভার প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- নারীপক্ষ’র সদস্য রওশন আরা। লিফলেট পাঠ করেন অরিত্রি বিনতে আতিকা, কোষধ্যক্ষ, পল্লী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবিতে স্থানীয় সমমান নারী সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন এর প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন এবং তারা তাদের বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন ।
বংশাল মহিলা সমিতির সভানেত্রী পারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিকেরা বর্তমানে খুব মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের ন্যায্য মজুরি ন্যূনতম মাসিক ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে।’
পল্লী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা সভানেত্রী কামরুন নাহার খান বলেন, বর্তমানে নিত্য প্রয়োজন দ্রব্যের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা সংসার চালাতে পারে না। কাজেই তাদের মাসিক বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করছি।’
নবীন মহিলা কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী ইয়াসমিন জাহান বলেন, ‘মজুরি কম হওয়ায় নারী শ্রমিকেরা পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে নিজেরা প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খায়না বিধায় তারা অপুষ্টিতে ভুগছে। পোশাক শিল্পে যেহেতু বেশীর ভাগই নারী শ্রমিক তাই তারা যেন স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ করে সুস্থভাবে কাজ করতে পারে সেই জন্য ন্যূন্যতম মাসিক মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ম্যধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে সেই সাঙ্গে শ্রমিকের বর্তমানে চাহিদারও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে শ্রমিকের বড় খরচ সন্তানের লেথা পড়া, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং পরিবহণ যা মজুরি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই মজুরি বৃৃদ্ধির সাথে সাথে মজুরির কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।’
অবস্থান কর্মসূচি তারা বিভিন্ন দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো-
অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের নুন্যতম সঙ্গতিপূর্ণ শ্রমের মজুরি ঘোষণা করতে হবে। ৬৫% বেসিক নিশ্চিত করতে হবে। মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৬০% মহার্ঘভাতা দিতে হবে। সব গ্রেডে জীবন যাত্রার ব্যায়ের সাথে সংগতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ থাকতে হবে। গ্রেড বৈষম্য দুর করতে মজুুরি কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে, বর্তমানে প্রচলিত ৭টি গ্রেডের বদলে ৫ টি গ্রেড করতে হবে। সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দিতে হবে, সোয়েটারে ৩শিফট ও ওভারটাইম নিশ্চিত করতে হবে। ইপিজেড-ইপিজেডের বাইরে সব কারখানায় সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০% ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে; বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে। তৈরি পোশাক শিল্পে যেহেতু বেশীর ভাগ নারী কর্মরত রয়েছে তাই মজুরি বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সবশেষে রওশন আরা, সদস্য নারীপক্ষ তিনি নারীপক্ষ’র এই আয়োজনে যারা যুক্ত হয়েছেন, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন, পুলিশ প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও প্রেস ক্লাবের প্রতিনিধি সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান।
ইউ