
সংগৃহীত ছবি
আজ ৮ মার্চ সকাল ১১.০০ টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে (৬৭ টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফরম) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নিজেরা করি এর সমন্বয়ক খুশী কবীর; বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু; বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমি; জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা, শক্তি ফাউন্ডেশন এর উপ-পরিচালক নিলুফা বেগম এবং আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কএর সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা। ঘোষণা পাঠ করেন কর্মজীবী নারীর কাজী গুলশান আরা দীপা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিবাদী সংঙ্গীত পরিবেশন করেন সানোয়ারা জাহান নীতু। নৃত্য পরিবেশন করেন মুক্তা ঠাকুর ও তার দল
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি ক্রমাগত চলমান এই দু:সময় আমরা কাটাবোই। অন্ধ কার কাটিয়ে আলো নিয়ে আসবো। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তির পথে হাঁটবো। তিনি সরকারের প্রতি যেকোনো মূল্যে আইন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জোর দাবি জানান।তিনি আরো বলেন সমসুযোগ আদায় করে নিতে হবে, সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সিডও সনদের সংরক্ষিত দুইটি ধারার উপর সংরক্ষণ প্রত্যাহার করতে হবে, বাল্যবিয়ে বন্ধ সহ সম্পদ সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার প্রদান করতে হবে।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্যে
নিজেরা করি এর সমন্বয়ক খুশী কবীর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জনপরিসরে, বাসে নারীরা যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এসকল ঘটনায় অপরাধীরা প্রশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে, প্রতিবাদ করার পরও কোন পদক্ষেপ েিনই। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন বাংলাদেশের নারী সমাজ সকল বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এই যাত্রার পথ মসৃণ নয়। এদেশের আদিবাসী- সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী সহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীরা নানাভাবে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সাম্প্রতিকসময়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠী নারীর মর্যাদা ও অধিকারকে ক্ষুণœ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি নারীর অর্জন কে ধরে রাখতে নারী বিদ্বেষী শক্তিতে প্রতিহত করার পাশাপাশি সকলকে সোচ্চার হতে ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমি বলেন, অর্ধেক জনগোষ্ঠীর নারী আজ কোথাও নিরাপদ নয়। নারী সহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় অভিযুক্তদের আইনী প্রক্রিয়ায় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানান।
শক্তি ফাউন্ডেশন এর উপ-পরিচালক নিলুফা বেগম বলেন আজ ঘরে বাইরে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বর্তমানে নারী নির্যাতনকারী ছাড়া পেলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ অবস্থায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকল সংগঠনকে নারী আন্দোলন গড়ে তোলার আ্হবান জানান তিনি।
আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কএর সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা বলেন, শুধু আদিবাসী নারী নয় যেকোনো নারী সহিংসতা শিকার হলে তার বর্ণ, গোষ্ঠী এবং শ্রেণী বিবেচনা না করে ঘটনার প্রতিকারের জন্য সকলকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান
সমাবেশে বক্তব্য শেষে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ১৪ টি দাবি সম্বলিত ঘোষণা পাঠ করেন কর্মজীবী নারীর কাজী গুলশান আরা দীপা। সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত একটি প্রতিবাদী র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মসূচিতে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সংগঠনের কর্মকর্তাসহ প্রায় জন পাঁচ শতাধিক উপস্থিত ছিলেন।
সঞ্চালনা করেন উই ক্যান এ্যালায়েন্স এর জাতীয় সমন্বয়ক জিনাত আরা হক।
//এল//