![দেশের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ৪২.৬৭ শতাংশ দেশের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ৪২.৬৭ শতাংশ](https://www.womeneye24.com/media/imgAll/2022July/anirban-2502081443.jpg)
সংগৃহীত ছবি
মধ্য পযার্য়ের নারীদের কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনতে এবং পেশাজীবী নারীদের মাঝারি ও উচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর তাগিদে শুরু হলো অনির্বাণ-রাইজ এণ্ড লিড’ কর্মসূচি।
দেশের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়ে ৪২ দশমিক ৬৮ শতাংশ হয়েছে। যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ। শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ বাড়লেও মাঝারি ও উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিনিধিত্ব আশঙ্কাজনকভাবে কম। যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অক্সফাম-বাংলাদেশ ও ওয়াটারএইড-বাংলাদেশ যৌথভাবে পেশাজীবী নারীদের নেতৃত্বের অগ্রসরে সহায়তা করতে ‘অনির্বাণ-রাইজ এণ্ড লিড’ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।
ওয়াটারএইড-বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহানের সভাপতিত্বে উদ্বোধন করেন অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমাইরা আজম। এছাড়া বক্তব্য দেন কাজী কনসালটিং ফার্মের কাজী এম আহমেদ।
হাসিন জাহান বলেন, সামাজিক রীতি, প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য ও পরিবারিক দায়িত্বের কারণে ক্যারিয়ারে বিরতির মতো কাঠামোগত বাধাগুলো নারীদের পেশাগত উন্নতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ ক্যারিয়ার বিরতি কখনোই একজন নারীর সম্ভাবনা নির্ধারণ করতে পারে না।
তিনি বলেন, একজন নারীর প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করার ক্ষমতা রাখেন। তাই বলে তার কাজের দক্ষতা কম নয়। কাঠামোবদ্ধ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আমরা নারীদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসতে সাহায্য করতে পারি। যাতে তারা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে নেতৃত্বের জায়গায় অবদান রাখতে পারেন।
আশীষ দামলে বলেন, "অগ্রগতির পরও অনেক নারী অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন, যা তাদের ক্যারিয়ারের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
কর্মক্ষেত্র থেকে ঝরে পড়া বিভিন্ন বয়সী নারীদের জিজ্ঞেস করলে তারা বছর দুয়েক বা কয়েক বছর কর্মক্ষেত্রে না থাকার কথা বলেন। এটা তাদের মানসিকভাবে অবদমিত করে।
তিনি আরো বলেন, একজন নারী সন্তান জন্মদানের পরও সবকিছু পরিচালনা করতে পারেন। এখনই সময় এমন কর্মপরিবেশ তৈরি করার, যেখানে বৈচিত্র্যময় নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।"
হুমাইরা আজম বলেন, সফলতা শুধু শিক্ষাগত দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না। এজন্য প্রয়োজন আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা, মানসিক প্রশিক্ষণ এবং অতিরিক্ত সময়কে কাজে লাগানোর কৌশল। আপনার জ্ঞান থাকলে আপনি সফল হবেন, তবে সেইসঙ্গে প্রয়োজন জোরালোভাবে কথা বলার আত্মবিশ্বাস, নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা।
তিনি বলেন, সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। এই পরিবর্তনে পুরুষদের ভূমিকা রাখতে হবে। স্থায়ী পরিবর্তনের লক্ষ্যে নারীদের বিদ্যমান বাঁধাগুলো ভাঙতে হবে এবং ভেতর থেকে জেগে উঠতে হবে।
অক্সফামের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, অগ্রগতির পরও অনেক নারী অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন, যা তাদের ক্যারিয়ারের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। এখনই সময় এমন কর্মপরিবেশ তৈরি করার, যেখানে বৈচিত্র্যময় নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের উইমেন’স রিটার্নশিপ প্রোগ্রামের প্রকল্প সমন্বয়ক নুসরাত আনোয়ার ও অক্সফাম-বাংলাদেশের ইকোনমিক ইনক্লুশন অ্যান্ড জাস্টিস বিভাগের প্রধান বিদৌরা তাহমিন খান।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, নারী নেতৃত্ব ও ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে যৌথভাবে অনির্বাণ রাইজ অ্যান্ড লিড নামক একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। মাঝ-ক্যারিয়ারের নারী পেশাজীবীদের দক্ষতা, অন্তদৃষ্টি ও আত্মবিশ্লেষণমূলক পরামর্শ দিয়ে তাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নেতৃত্বের ভূমিকা অর্জনে সহায়তা করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। কর্মসূচিটি ক্যারিয়ার বিরতিতে থাকা নারীদের কর্মজীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করবে। এছাড়া নারীদের ক্যারিয়ার পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য ও নেতৃত্বের পথ সুগম করবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান লিঙ্গবৈষম্য ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের সম্ভাব্য পথগুলো নিয়ে ‘ব্রেকিং ব্যারিয়ার্স ঃ আধুনিক কর্মক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, চেঞ্জ মেকার্সের লিডারশিপ কোচ উমা চ্যাটার্জী, ইনোভিশন কনসাল্টিং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সরওয়ার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কর্মকর্তা হাসনে আরা বেগম প্রমুখ।
//এল//