সংগৃহীত ছবি
যৌন হয়রানি কার্যকরভাবে প্রতিরোধ ও এর প্রতিকার বিধানে আইনের প্রয়োজনীয়তা এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে নীতি পরিবর্তন, পরিপূণ আইন প্রণয়নে এডভোকেসীর উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় সিরডাপ অডিটোরিয়ামে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর আয়োজনে “যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করনীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভা তা তুলে ধরেন বিশিষ্টজনেরা ।
উক্ত সভায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)এর চেয়ার পার্সন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জনাব জেড. আই. খান স্বাগত বক্তব্য দেন। আসক-এর জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির সভাটি সঞ্চালনা করেন। প্রকল্প সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম, কর্মএলাকায় যৌন হয়রানি ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার চিত্র, এবং যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের বর্তমান অবস্থার ওপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর সহায়তায় ব্র্যাকের সংগে যৌথভাবে “ অএঘঊঊ-অধিৎবহবংং, অপঃরড়হং, ধহফ অফাড়পধপু ভড়ৎ এবহফবৎ-ঊয়ঁধষ ধহফ ঝধভব ঝঢ়ধপবং ভড়ৎ ডড়সবহ ধহফ এরৎষং ” --অগ্নি প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে আসক। প্রকল্পটির অধীনে গাজীপুর ও রাজশাহী জেলায় বিশেষ করে পরিবহন, বাজার স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সাইবার ভিত্তিক যৌন হয়রানি এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ করে জেন্ডার সমতায়নের লক্ষ্যে ১৪ টি সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও) সহ সরকারি, বেসরকারি কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শিক্ষাঙ্গনে এবং কর্মস্থলে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের মাইলফলক রায়ের এক যুগ পার হয়ে গেছে। এ রায়ে সুষ্পষ্টভাবে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নির্দিষ্ট আইনে রূপান্তর না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী এ নির্দেশনা আইন হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
২০০৯ সালে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পরও যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিশেষত: বিশ্ববিদ্যালয়ে) যৌন হয়রানির ঘটনা আশংকাজনকভাবে জানা যাচ্ছিল এবং ভুক্তোভোগীরা আশানুরূপ প্রতিকার পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছিলো না, তাই ২১ অক্টোবর, ২০২১ তারিখে রায়টির বাস্তবায়ন চেয়ে পুনরায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) (রিট পিটিশন নং ৮৮৭৪/২০২১)। উচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে সেই অনুসারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন না করায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে দায়ের করা রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব,সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৪০টি মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্টার জেনারেল, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে বিবাদী করা হয়। একইসঙ্গে রিট আবেদনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের আর্জি জানানো হয়।
এছাড়াও রায় বাস্তবায়নের একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকীগুলোতে পর্যায় ক্রমে গঠন করা হবে মর্মে লিখিত বক্তব্য প্রদান করে।
নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ও প্রতিকারে পূর্নাঙ্গ আইনের খসড়াটির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি সুনির্দিষ্ট আ্ইন প্রণয়নে আলোচনার ভিত্তিতে অংশগ্রহনকারীদের সুপারিশ দিতে আহবান জানান।
//এল//