সংগৃহীত ছবি
পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় নারীর সমতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন নারী অধিকার কর্মীরা। সেসঙ্গে এও বলা হয়েছে,জেন্ডার সংবেদনশীলতার অভাবে বিদ্যমান সুবিধাগুলো থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পেতে নারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নারী অধিকারকর্মীরা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের বাধা দূর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর প্রথম আলোর কার্যালয়ের মিলনায়তনে দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগিতায় নারীপক্ষর আয়োজনে নারীর এগিয়ে চলা : বাধা ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আলোচনা সভায় আহ্বান জানানো হয়।
বহ্নিশিখার ম্যানেজিং পার্টনার তাসাফি হোসাইন প্রবন্ধ উপস্থাপনে বলেন, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, পিরোজপুরের চারটি উপজেলায় নারীর উপর সহিংসতা রোধে তৃণমূল পর্যায়ে জবাবদিহিতা, স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি উপর গবেষণায় উঠে এসেছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোর অভাব, পাশাপাশি পরিষেবা প্রদানকারীরা নারীদের চাহিদার প্রতি সংবেদনশীল নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা যখন স্বাস্থ্যসেবা দিতে যান তখন নারীদের প্রায়ই আপত্তিকর প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, কখনও কখনও, গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নারীদের নিষেধ করা হয় এবং পরিষেবা প্রদানকারীরা তাদের আপত্তিকর প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন। যেমন সন্তানের পিতা কে এবং কেন তারা গর্ভপাত চান।
নারীপক্ষের নির্বাহী সদস্য তাসনীম আজীম বলেন, ৮০-এর দশকে তারা শরীরের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেছিল যা এখনো প্রাসঙ্গিক।
তিনি বলেন, যে সরকার ওষুধের মাধ্যমে মাসিক নিয়ন্ত্রণে নারীদের অ্যাক্সেস সীমিত করার চেষ্টা করছে, যা এম আর এম নামেও পরিচিত, যা নারীদের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি এমআরএম পরিষেবা সহজলভ্য এবং নিরাপদ করার দাবি জানান।
নারী অধিকার কর্মী ও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেন, গত ৪০ বছরে নারী অধিকার আন্দোলনের কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখিনি। তরুণ নারীদের মধ্যে নেতৃত্ব গড়ে তোলা দরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রোকেয়া হলের ছাত্রীরাই প্রথম বেরিয়ে এসেছিলেন। তরুণ নারীদের দেখে আশান্বিত হয়েছি। তারা কেন অদৃশ্য হয়ে গেল।
তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পে তরুণ নারীদের ভূমিকার কথা আসেনি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা, পারিবারিক কাঠামো, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং কিছু সাংস্কৃতিক বিষয়ে সংস্কারসহ কিছু সংস্কার প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নারী পক্ষের সভাপতি গীতা দাস, গবেষক ডা. হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী, প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার নাজনীন আখতার, ওমেন উইথ ডিস এবেলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর শিরীন আক্তার এবং তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংঘের নির্বাহী পরিচালক শামীমা খান।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী।
//এল//