ছবি সংগৃহীত
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ পঁচারিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নারীর চুল কেটে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো নারীবাদি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জনানো হয়।
জাতীয় দৈনিক ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বরাতে বিবিৃততি বলা হয়, উপজেলার রাখালবুরুজ পঁচারিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে সাবেক স্বামীকে ঘরে পাওয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নারীর চুল কেটে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী রিপু মিয়ার সাথে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বিয়ে হয়। গত ১২ মে রবিবার সাবেক স্বামী মোনারুল ইসলামের সাথে ওই গৃহবধূকে দেখতে পায় প্রতিবেশীরা। এ সময় রিপু মিয়া বাড়িতে ছিল না। এ ঘটনায় গ্রামের শাহজাহান আলী, চামেলী বেগম, আব্দুস ছাত্তার, হারুন মিয়া, আইনুল ইসলাম ও দেলবর রহমানসহ সাতজন ওই নারীকে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে। তারা সাবেক স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে ওই নারীকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে উল্টো করে বেঁধে তাকে বেধড়ক মারধর করে। অভিযুক্তরা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার মাথার চুল কেটে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। পরে পুলিশ এসে নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরিবারের সদস্যরা তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বেআইনী ফতোয়ার মাধ্যমে নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় সামাজিকভাবে নির্মম নির্যাতন ও হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে এ ধরনের ঘটনা নারীর স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত করছে ও সামগ্রিকভাবে তাদের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পাশাপাশি সংগঠনটি ২০০১ সালের হাইকোর্টের রায়ের আলোকে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বেআইনি ফতোয়া বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে নির্যাতনের শিকার নারীর সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণেরও অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে যুক্ত করে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইউ