সংগৃহীত ছবি
রুনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দিনাজপুরে ইতিমধ্যে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছে। চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কেক তৈরির প্রশিক্ষণ ও অফলাইন এবং অনলাইনের মাধ্যমে নিজের হাতের তৈরি কেক বিক্রি করছেন।
এতে বাড়তি প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন শিক্ষিকা রুনা ইয়াসমিন। নিজ বাড়িতে কেক তৈরি প্রশিক্ষণ প্রদান করে আরও বেকার নারীদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন তিনি। হাতে-কলমে কেক তৈরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বেকারত্ব দূর করছেন প্রশিক্ষাণার্থী নারীরা।
দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুর বালুয়া ডাঙ্গা মোড় পূর্ব এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রুনা ইয়াসমিন। সেখানেই বিভিন্ন বয়সি নারী উদ্যোক্তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কেক তৈরির প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন রুনা ইয়াসমিন। তিনি নিজেও অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের কেক বিক্রি করছেন।
দিনাজপুরসহ বিভিন্ন শহরেই জম্মদিনের কেক, বিবাহবার্ষিকীর কেকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কেক বিক্রি হচ্ছে। শিক্ষকতার পাশাপাশি তার এই কাজে অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছেন তার পরিবার। এখন তিনি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। শিক্ষকতার পাশাপাশি কেক তৈরির প্রশিক্ষণ ও কেক বিক্রি করেই প্রতিমাসে বাড়তি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করছেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা নতুন নারীরা সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন। ১ পাউন্ড কেক সাড়ে ৪শত থেকে ৬শত টাকায় বিক্রি করেন। মূলত চকলেট কেক, ভ্যানিলা কেক, হোয়াইট ফরেস্ট কেক ও ব্ল্যাক ফরেস্ট কেকসহ আরও কয়েক ধরনের কেক তৈরি প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন।
শিক্ষিকা রুনা ইয়াসমিন জানান, করোনাকালীন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ঢাকাসহ ভারতে গিয়েও কেক তৈরির বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। সেই সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তিনি নিজেকে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করেন। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ নিজের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না রেখে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার নারী উদ্যোক্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তারাও এখন সমাজের এক একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
প্রশিক্ষণ দিতে আসা স্মৃতি বেগম বলেন, নিজে কিছু করব, এই চিন্তা নিয়েই রুনা ইয়াসমীন আপুর নিকট কেক প্রশিক্ষণ নিতে আসা। দুই দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখন আমি বাড়িতে নিজেই ভাল মানের কেক তৈরি করতে পারব। আমিও উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারব।
কেক তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণের আগ্রহী নতুন নারী উদ্যোক্তারাও সমাজে আত্মকর্মশীল ও কর্মসংস্থান গড়ে তোলার পাশাপাশি নিজেকে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রস্তুত করছেন।
প্রশিক্ষণ নিতে আসা বায়তুন নাহার বলেন, খুব ভাল ভাবেই নিজেকে এখন প্রস্তুত মনে হচ্ছে। আমাদের সমাজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন কেক আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। তাই কেক তৈরি প্রশিক্ষণ নিয়েছি। বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারব।
দিনাজপুর বিসিক মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। বেকার নারীরা যেসব বিষয়ে পারদর্শী, সেসব বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করে বেকারত্ব দূর করছে। বিসিকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা এখন অনেক উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন এবং পুরুষের পাশাপাশি নারীরা যদি এমন উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করেন তাহলে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
//এল//