ঢাকা, বাংলাদেশ

রোববার, পৌষ ৭ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

English

বৃত্তের বাইরে

গৃহিনী থেকে সফল উদ্যোক্তা মাসুমা

উইমেনআই প্রতিবেদকঃ

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

গৃহিনী থেকে সফল উদ্যোক্তা মাসুমা

উদ্যোক্তা মাসুমা আক্তার

করোনাকালে মাসুমার পরিবার হুমকির মুখে পরতে বসেছিলো  কিন্তু সেখান থেকে মাসুমা নিজ চেষ্টায়, কঠোর পরিশ্রম করে পথ বের করে নিয়েছেন। কিন্তু এরই মধ্যে মাসুমা গৃহিণী থেকে সফল উদ্যোক্তা হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুরুতে আম, জলপাই, বরই, আমলকী, রসুন, মরিচের আচার তৈরি করেছেন মাসুমা। সবচেয়ে বেশি সাড়া মিলছে গরুর মাংসের আচারে। নিজের ব্র্যান্ডের নাম দিয়েছেন আরএস ফুড কর্নার। গরুর মাংসের আচার ১২০০, রসুনের আচার ৬০০ এবং আমসহ অন্যান্য আচার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। সারা দেশ থেকে অর্ডার আসছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকার শুধু আচার বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্য বিক্রি থেকে মাসে আয় গড়ে ২০ হাজার টাকা। এ থেকে যে লাভ হয়, তাতেই তাঁদের সংসার চলছে  ভালোভাবে। দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে মাংসের আচার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে হয়েছেন সাবলম্বী। 

স্বামী রাজিবুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসা করছেন মাসুমা আক্তার। তার মাংসের আচার দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৭টি দেশে গেছে। এখনো বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়মিত আচারের অর্ডার আসছে তার কাছে।
বিদেশে কিভাবে মাংসের আচার পাঠাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশগামীদের হাতে এ পর্যন্ত কানাডা, লন্ডন, আমেরিকা, চীনসহ ১৭টি দেশে আচার পাঠিয়েছেন। এখনও বিভিন্ন দেশ থেকে ১০০ কেজি, ১৫০ কেজি করে অর্ডার আসছে। সর্বশেষ কানাডায় ৮ কেজি আচার স্যাম্পল হিসেবে পাঠিয়েছেন। ভালো লাগলে তারা আরও বেশি অর্ডার করবেন বলে জানান তিনি।

মাসুমা আক্তার বলেন, আমি তো নতুন উদ্যোক্তা। আমরা বুঝতে পারছি না মাংসের আচারের জন্য লাইসেন্স কোথায় গেলে সহজভাবে পেতে পারি। তবে আমাকে গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক) থেকে পণ্যের বাজারজাত সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন এবং সহযোগিতা করছেন। দেশের বাইরে পণ্য পাঠানো এবং বায়ারদের সঙ্গে কিভাবে যোগাযোগ করবো সব ব্যবস্থা তারা করে দিচ্ছে।

মাসুমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী বগুড়ার একটি চার তারকা হোটেলে হিসাব বিভাগে চাকরি করতেন। করোনার প্রভাবে আমার স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার পর আমরা খুব দুশ্চিন্তায় পড়ি। পরিবার নিয়ে আর্থিক অভাবের মধ্যে ডুবে যাবো এমন অবস্থা হয়েছিল। সে সময় আমার শিশু কন্যার মাটির ব্যাংকে জমানো ৩০০ টাকা দিয়ে আলুর চিপস বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি শুরু করি। কিছু টাকা হলে কাপড়ের ব্যবসার মাধ্যমে টাকা উপার্জনের চেষ্টা করি। কিন্তু এই ব্যবসায় ভালো কিছু হচ্ছিল না। পরে মাংসের আচার করে অনলাইনে বিক্রির পরিকল্পনা করি। আচার বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার চালানোর পর ভালো সাড়া পাই। এরপর থেকে আমাদের দুশ্চিন্তা মিলিয়ে যায়।

মাংসের আচারের পরিকল্পনা পেলেন কিভাবে জানতে চাইলে মাসুমা আক্তার বলেন, অনলাইনে ব্যবসা করতে গেলে আসলে ইউনিক কিছু না হলে সহজে সফল হওয়া যায় না। আমার কাছে মাংসের আচারটাকে ইউনিক মনে হয়েছে। মাংসের আচার আমি শিখেছি আমার শাশুড়ির কাছে। তার কাছে গল্প শুনেছি, যখন সবার বাড়িতে ফ্রিজ ছিল না ওই সময় কোরবানির ঈদে প্রত্যেকের বাড়িতে রান্না করে খাওয়ার চেয়েও অতিরিক্ত মাংস থাকতো। তখন সেই মাংস শুকিয়ে আচার করে রাখা হতো। সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া যেত। ওই সময় আমার এই বিষয়টি মাথায় আসে। তখন প্রাথমিকভাবে আধা কেজি মাংস দিয়ে আচার তৈরি করে ফেসবুকে প্রচার করি। অনেকেই আমার কাছে অর্ডার দেয়। এভাবে অনলাইনে যারা কিনতেন তাদের মুখে মুখে এবং আমার ফেসবুক প্রচারণাসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে আমার সফলতা দ্রুত আসে। 


শুরুতে এই আচার ১ হাজার টাকা কেজি বিক্রি করলেও দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে প্রতি কেজি ১৪০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে হাড়-চর্বি ছাড়া ফ্রেশ মাংস কিনতে খরচ পড়ছে প্রতি কেজি ৮৫০ টাকা। বিভিন্ন সাইজের বোয়েমে ভরে তিনি আচার বিক্রি করছেন। ২৫০ গ্রাম ওজনের এক বোয়েম মাংসের আচারের দাম ৩৫০ টাকা। 
প্রথম দিকে মাসে ২০ থেকে ২৫ কেজি মাংসের আচারের অর্ডার পেতেন। এখন তিনি মাসে ২৫০-৩০০ কেজি আচারের অর্ডার পান। মাসে ১০০ কেজির ওপর মাংস দেশের বাইরে যায়। আর বাকি আচারের অর্ডার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে। সব মিলিয়ে মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার আচার বিক্রি করছেন মাসুমা আক্তার।।

‘করোনাকালে মাসুমার পরিবার হুমকির মুখে পরতে বসেছিলো  কিন্তু সেখান থেকে মাসুমা নিজ চেষ্টায়, কঠোর পরিশ্রম করে পথ বের করে নিয়েছেন। করোনার করাল গ্রাস এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে মাসুমা গৃহিণী থেকে সফল উদ্যোক্তা হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুরুতে আম, জলপাই, বরই, আমলকী, রসুন, মরিচের আচার তৈরি করেছেন মাসুমা। সবচেয়ে বেশি সাড়া মিলছে গরুর মাংসের আচারে। নিজের ব্র্যান্ডের নাম দিয়েছেন আরএস ফুড কর্নার। গরুর মাংসের আচার ১২০০, রসুনের আচার ৬০০ এবং আমসহ অন্যান্য আচার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। সারা দেশ থেকে অর্ডার আসছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকার শুধু আচার বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্য বিক্রি থেকে মাসে আয় গড়ে ২০ হাজার টাকা। এ থেকে যে লাভ হয়, তাতেই তাঁদের সংসার চলছে  ভালোভাবে। মাসুমার এই সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের নির্দেশে তাঁকে ঋণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। 

//এল//

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ যানবাহনের সংঘর্ষ

রাশিয়ায় বহুতল ভবনে ৯/১১ স্টাইলে ড্রোন হামলা

দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের পক্ষে বিএনপি ও সমমনারা

অধিকার মর্যাদা নিশ্চিত করতে বৈষম্যগুলো দূর করার আহ্বান

বিপিএল ইতিহাসে প্রথমবার ট্রফি ভ্রমণ

বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন

ইসলামী ব্যাংকে সাইবার সিকিউরিটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মাদ্রিদে প্রবাসী বাংলাদেশি মিজান সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

কমিশনের খসড়া সুপারিশে অসন্তোষ: আন্দোলনের পথে ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তা

চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

স্টল ভাড়া কমানোর দাবিতে বাংলা একাডেমিতে অনশনের ঘোষণা 

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাসের আহ্বান 

ইউসেপ বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারপারসন হলেন ড. ওবায়দুর 

রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ছাড়া পুলিশের সংস্কার ফলপ্রসূ হবে না

চাঁদাবাজরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, সতর্ক থাকুন: হাসনাত